আব্দুল হাই (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
আগামী এপ্রিলের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য মাস ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
স্থানীয় ভাবে নির্বাচনের ব্যাপক প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রচার প্রচারণায় পিছিয়ে নেই দরবার ভিত্তিক
চরমোনাই পীরের দল ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল ২১ জুন দলটি কুড়িগ্রামে গণ সমাবেশে জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত ঘোষণা করছে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি রেজাউল করিম।
প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে বেড়িয়ে আসছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে অতীতের নানা কর্মকাণ্ডের ছবি।
কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী ও কচাকাটা) আসনে দলীয় এমপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে
ঠিকাদার হারিসুল বারী রনিকে। রনি দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগে বেশি একটা সুবিধা করতে না পাড়ায় প্রথম দিকে নাগেশ্বরী পৌরসভা নির্বাচনের স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালান। গত ২৩ সালের ৮ফেব্রুয়ারী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয়
উপদেষ্টা ডাঃ আক্কাস আলীর হাতে ফুল দিয়ে যোগ দেন দলে। হারিসুল বারী রনি বর্তমানে ইসলামি আন্দোলন
বাংলাদেশ কুড়িগাম জেলা শাখার শিল্প ও ব্যনিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দায়িত্ব পালন করছে ।
কুড়িগ্রাম (সদর) ২ আসনে এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছে বিতর্কিত ব্যক্তি আওয়ামী দোসর
মাওলানা অধ্যক্ষ নুর বখতকে । মাওলানা নুর বখত বিগত হাসিনা সরকারের আমলে কুড়িগ্রাম জেলার আওমী লীগের
বিভিন্ন জনসভায় নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া ও বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে উসকানি বক্তব্য দিতে
দেখা গেছে। এখনো মাওলানা নুর বখতের অনেক বিতর্কিত বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আওয়ামী দোসর পল্টিবাজ ব্যক্তিকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করায় কুড়িগ্রামে
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। মাওলানা নুর বখতকে প্রার্থী করায় কেউ কেউ
ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে এমপি হিসেবে চূড়ান্ত করছে জাতীয় পাটি থেকে নির্বাচিত সাবেক
এমপি ডা. আক্কাস আলী সরকার কে। গত দশম সংসদ নির্বাচনে ওই আসনের মহাজোটের (জাতীয় পার্টি)
সংসদ সদস্য মাইদুল ইসলাম মারা গেলে উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
কয়েক মাস পর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেলেও ওই আসন মহাজোটের
প্রধান দল আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দেন। এরপর তিনি ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়ে নেতা বনে যান।
ডা. মো. আক্কাস আলী সরকারকে গত ২০২৪ সালের হাসিনার ডামি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের
কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সদস্য পদ থেকে ডা. মো. আক্কাস আলী সরকারকে বহিষ্কার করেছিল দলটি। কুড়িগ্রাম-৩
(উলিপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনেও করেছিল তিনি । গত ২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনার
পতন হলে আবার চরমোনাইতে যোগ দেন। এদিকে গত ২১ জুন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে ইসলামি
আন্দোলনের সমাবেশে ডা. আক্কাস আলী অনুস্থিতিতেই দলীয় এমপি হিসেবে নাম ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম।
আওয়ামী দোসরদের দলীয় এমপি প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকে প্রার্থীদের নিয়ে চলছে নানা আলোচনা
সমালোচনা। দোসরদের প্রার্থী করায় কুড়িগ্রামে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা
গেছে। কুড়িগ্রামে ইসলামি দলগুলো আগামীতে জোটগতভাবে নির্বাচন করলে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয়
ব্যক্তিদেরর মনোনয়ন না দিলে এ আসনগুলোতে চরম ভরাডুবি হবে বলে অনেকে মনে করছে।
কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী চর রাজিবপুর ও রৌমারী) সংসদীয় আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে সহকারী
অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে পরিচয় করিয়ে দেন দলের নেতাকর্মীদের।