মোঃ আসতারুল আলম, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় ভ্যানচালক আসাদুল ইসলাম হত্যা মামলার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুই আসামিকে গ্রেপ্তারসহ ছিনতাইকৃত চার্জার ভ্যান ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বিরল উপজেলার দামাইল গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে নাজমুল হক মুন্না (৩২) এবং বোচাগঞ্জ উপজেলার জালারী আটগাঁও গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে রুবেল ইসলাম ওরফে সাহেব আলী (৩৬)।
পুলিশ জানায়, সোমবার (২১ জুলাই) ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান আসামি মুন্নাকে বিরল পৌরসভার মোতাপুকুর গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অপর আসামি রুবেলকে আটক করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসাইন বলেন, নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) গত ১৫ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে চার্জার ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন এবং এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ১৬ জুলাই সকালে বিরল উপজেলার মাটিয়ানদিঘী গ্রামের একটি সড়কের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
এরপর নিহতের বাবা জহুরুল ইসলাম ১৭ জুলাই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিরল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-১৬/১৯৮, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড)।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রধান আসামি মুন্না আগে থেকেই আসাদুলের পরিচিত ছিলেন। বছরখানেক আগে ঠেলা ভ্যান তৈরির জন্য আসাদুলের কাছে ১২ হাজার টাকা অগ্রিম দাবি করেন মুন্না এবং অগ্রিম ৬ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও ভ্যান না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আসাদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
১৫ জুলাই রাতে মুন্না ‘ভাড়া খাটানোর’ কথা বলে আসাদুলকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে মোবাইল খুঁজে দেওয়ার নাম করে আসাদুলকে নীচু হতে বলেন। ঠিক তখনই পরিকল্পনা অনুযায়ী সঙ্গে থাকা ধারালো দা দিয়ে তার মাথায় এলোপাতাড়ি কোপ মারেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আসাদুলের।
পরে মুন্না ছিনতাইকৃত চার্জার ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান এবং সহযোগী রুবেলের সহায়তায় জনৈক কিনু দেব শর্মার কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
পুলিশ সুপার জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাপস) আনোয়ার হোসেন এবং বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সবুরের নেতৃত্বে গঠিত একটি চৌকস তদন্ত দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে সক্ষম হয়। আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ছিনতাইকৃত চার্জার ভ্যান, মোবাইল ফোন এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।