Home পঞ্চগড় বিদ্যালয়ে অনিয়মিত শিক্ষক, ক্ষতিগ্রস্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

বিদ্যালয়ে অনিয়মিত শিক্ষক, ক্ষতিগ্রস্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

বিদ্যালয়ে অনিয়মিত শিক্ষক, ক্ষতিগ্রস্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ১৪৩নং সর্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক আনিসুজ্জামান স্বপনের নিয়মিত অনুপস্থিতি শিক্ষকতার প্রতি তাঁর দায়িত্বহীন আচরণকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত না থেকেও তিনি নিচ্ছেন সরকার নির্ধারিত বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। ফলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, নষ্ট হচ্ছে তাদের শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

১৬ জুলাই সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পাঁচজন স্টাফের মধ্যে চারজন উপস্থিত থাকলেও সহকারী শিক্ষক আনিসুজ্জামান স্বপন বিদ্যালয়ে ছিলেন না। স্থানীয়দের দাবি, তাকে ওই সময় চাকলাহাট বাজারে ঘুরতে দেখা গেছে।

বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, “আমাদের চারজন স্যার-ম্যাম নিয়মিত আসেন। কিন্তু স্বপন স্যার মাঝে মাঝে এসে দু-একটা ক্লাস নিয়ে চলে যান। অনেক দিন আসেনই না। এমনও হয়েছে, আমাদের অংক দিয়ে চলে গেছেন, পরদিন এসে খাতা দেখেছেন।”

স্থানীয় বাসিন্দা সাবেদ আলী বলেন, “অনেকবার দেখেছি তিনি অল্প সময় থাকেন, আবার চলে যান। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন উদাসীনতা খুবই দুঃখজনক। শিক্ষক যদি স্কুল ফাঁকি দেন, তাহলে ছাত্ররা কী শিখবে? দিন দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এর দায় কার?”

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি চাকরিজীবী হয়েও দায়িত্বে অবহেলা করায় এলাকার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ছে। এমন আচরণ শুধু অনৈতিক নয়, এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়া উচিত।

এলাকাবাসী এবং অভিভাবকরা দ্রুত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা চান, শিক্ষক স্বপনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং বিদ্যালয়ে নিয়মিত ও দায়বদ্ধ শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষাদান নিশ্চিত করা হোক

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, “আমি মাসিক সমন্বয় সভায় এই বিষয়টি একাধিকবার আলোচনা করেছি। তাকে বলেছি নিয়মিত উপস্থিত থাকতে। কিন্তু তিনি কোনো কথাই শুনছেন না। মনে হয়, তিনি নিজের নিয়মেই চলছেন।”

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোমিনুল হক বলেন, “আমি বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের স্বাক্ষর দেখেছি। তবে তিনি বাস্তবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Facebook Comments Box

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here