Friday, June 20, 2025
Homeআন্তর্জাতিকইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি

ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মোজো ডেস্কঃ
ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হবে কি না এই বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জবাবে তেহরান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে যোগ দিলে নরকে পরিণত হবে পুরো অঞ্চল। আর নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, শাসক পরিবর্তন নয়, ইরানের পরমাণু ও ব্যালিস্টিক কর্মসূচি ধ্বংস করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এদিকে, সপ্তম দিনেও সামরিক স্থাপনায় পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইরান-ইসরাইল। এতে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে দুপক্ষেরই।

পাল্টপাল্টি হামলা অব্যাহত রেখেছে ইরান ও ইসরাইল। ইসরাইলি ড্রোন ও বিমান একযোগে আঘাত হেনেছে তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে। ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা শাখার বিশেষ বাহিনীর সদর দফতর, সম্প্রচার কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনে চালানো হয়েছে হামলা। ইসরাইল বলছে, এসব স্থাপনাই তাদের জন্য কৌশলগত হুমকি। প্রতিটি হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানকে দুর্বল করে দেয়া এবং পরমাণু কর্মসূচির সক্ষমতা ধ্বংস করা।

তেহরানে হামলার পর একাধিক জায়গায় অনুষ্ঠিত হয় নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আহভাজ শহরে কফিন বহন করে শোকমিছিলে অংশ নেন শত শত মানুষ। ইরান দাবি করছে, সাধারণ মানুষের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। যদিও এসব হামলাকে ‘সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযানের’ অংশ বলেই দাবি করছে নেতানিয়াহু বাহিনী।

ইসরাইলি হামলার জবাবে ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ধরনের ড্রান দিয়ে পাল্টা আঘাত হেনেছে ইরানও। ইসরাইলের একটি হাসপাতাল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, ইরানের হামলায় সামরিক ঘাঁটি ছাড়াও বেসামরিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এসব ভবন ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি ইরানের।

যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের হামলায় যোগ দিলে পুরো অঞ্চলে নেমে আসবে নরক, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ নয়। তার মতে, যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এতে জড়ান, তবে ইতিহাসে তিনি চিহ্নিত হবেন এমন এক নেতা হিসেবে, যিনি এমন একটি যুদ্ধে পা রেখেছিলেন, যার সঙ্গে তার দেশের স্বার্থের কোনো মিল ছিল না।

এদিকে, ইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে হামলা শুরুর বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ ওইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির মধ্যে কয়েক দফা ফোনালাপ হয়েছে।

ইরান বলছে, যদি ইসরাইল হামলা বন্ধ না করে, তারা পরমাণু আলোচনায় ফিরবে না। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরমাণু কর্মসূচি থামানোই ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য। তবে প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগে পিছপা হবেন না তিনি।

ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের মতে, ইরান এখন আর দূরবর্তী হুমকি নয়, বরং সরাসরি সংঘাত উপযোগী শক্তি। সে অনুযায়ী হামলার গতি আরও বাড়াতে যাচ্ছে তেল আবিব। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নিরাপত্তা জটিল হয়ে পড়েছে। আকাশপথ বন্ধ থাকায় নৌপথে সাইপ্রাসে পৌঁছেছে শত শত ইসরায়েলি নাগরিক। লারনাকা ও লিমাসোলে ক্রুজ জাহাজে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে তাদের।

তীব্র হামলার মধ্যেও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, শাসক পরিবর্তন নয়, বরং পরমাণু ও ব্যালিস্টিক কর্মসূচি ধ্বংস করাই তাদের মূল লক্ষ্য। তবে এর ফলস্বরূপ ইরানি সরকার দুর্বল হয়ে পড়লেও তা হবে কেবল একটি ‘ঘটনাপ্রবাহ’, কোনো নির্ধারিত উদ্দেশ্য নয়।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর