আনোয়ার হোসেন, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড (রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় ছাত্র ও জনতা। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের চারমাথা এলাকায় ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে এই কর্মসূচি শুরু হয়, যা চলে টানা দুই ঘণ্টা।
এসময় মহাসড়কের দুই পাশে তিন থেকে চার কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। দুরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
পরে দুপুর ২টার দিকে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইপিজেড বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারকে জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এমএ মতিন মোল্লা, সংগঠক রফিকুল ইসলাম, মোকছেদ ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবু রায়হান, আবদুর রাজ্জাক, আসলাম মিয়া এবং সাঁওতাল নেতা মেখায়েল বেসরা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে অবস্থিত রংপুর চিনিকলের জমিতে ‘রংপুর ইপিজেড’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। চিনিকল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ৪৫০ একর জমি বেপজাকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এই ইপিজেড বাস্তবায়িত হলে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে, যার মধ্যে সাঁওতাল জনগোষ্ঠী অগ্রাধিকার পাবে।
তবে বক্তারা অভিযোগ করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইপিজেড বাস্তবায়নের বিরোধিতা করছে এবং তারা চিনিকলের জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে।
প্রসঙ্গত, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি রয়েছে। এক সময় এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। পরে আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে সাঁওতালরা দফায় দফায় জমিটি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।