আল মাহমুদ দোলন, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি:
জাল ভিসায় সৌদি পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারণার অভিযোগে জাকির হোসেন নামে দেবীগঞ্জ চিলাহাটি ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গত ৪ জুন দুপুরে মামলার প্রেক্ষিতে জাকির পঞ্চগড়ের আমলী আদালত-২–এ জামিনের আবেদন করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটক ব্যক্তি চর তিস্তা পাড়া খাটিয়াডাঙ্গা এলাকার ওবায়দুল হক কমরুর ছেলে মো. জাকির হোসেন (৫০)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই মামলায় অভিযুক্ত আরেক ব্যক্তি হলেন ভুজারীপাড়া এলাকার সাবুল ইসলামের ছেলে মো. সপিকুল ইসলাম (৫০)।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, উচ্চ বেতনের চাকরির আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগী তিনজন, সামসুদ্দোহার ছেলে ফরহাদ হোসেন, জব্বার আলীর ছেলে ফরহাদ হোসেন এবং বাদীর ছেলে তৌহিদ ইসলাম এর কাছ থেকে এই দুই আসামি প্রায় ১৬ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। পরে তাদের জাল ভিসার মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। অপর দুই ব্যক্তির একজন দলেনা বেগমের ভাই ও অপরজন বোনের স্বামী।
তৌহিদ ইসলাম সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং ১১ দিন কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে আসেন। তার ভাষ্যমতে, অপর দুইজন এখনো সেদেশে অবৈধভাবে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং দারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
এই প্রতারণার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ২৪ এপ্রিল ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কিন্তু সহযোগিতা না করে বরং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীতে তৌহিদের মা দলেনা বেগম গত ২৮ এপ্রিল দেবীগঞ্জ আমলী আদালত-২–এ মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ১৩৪/২০২৫। এই মামলায় জামিন নেওয়ার জন্য গত ৪ জুন জাকির হোসেন আদালতে উপস্থিত হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২১ মার্চ চিলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতে একই বিষয়ে দলেনা বেগম অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান বিবাদীদের বিষয়টি সমাধানের জন্য জানালেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। এরপর দলেনা বেগম ১৫ মার্চ তার প্রদানকৃত সাড়ে ৫ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে বিবাদীগণকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। কিন্তু এই সবে কর্ণপাত না করায় সর্বশেষ ২৮ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করেন দলেনা বেগম।
সৌদি ফেরত তৌহিদ ইসলাম বলেন, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় ধারদেনা আর জমিজমা বিক্রি করে মা সৌদিতে পাঠিয়েছিল জাকির ও সপিকুলের মাধ্যমে। চাকরিতো পরের কথা উলটো জেল খেটে বাসায় ফিরেছি। আমার মামা আর খালু এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে সৌদিতে। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না দালালরা।