ফয়সাল হক, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্দা নামাচর গ্রামের ২০ মাস বয়সী শিশু মাসুম বিল্লাহ জন্ম থেকেই বিরল এক রোগে আক্রান্ত। জন্মের পরেই মা মোরশেদা বেগম জানতে পারেন, তার সন্তানের নেই স্বাভাবিক পায়ুপথ। চিকিৎসার পরবর্তীতে পেটে একটি অস্থায়ী পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে হলে প্রয়োজন আরও একটি জটিল অস্ত্রোপচার। কিন্তু চতুর্থ অপারেশনের খরচ জোগাতে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
মাসুম বিল্লাহ দিনমজুর শফিকুল ইসলাম ও মোরশেদা বেগম দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। পারিবারিকভাবে তারা চরম অর্থকষ্টে দিনযাপন করছেন। জমি বলতে কেবল তিন শতক বাড়িভিটাই সম্বল। এরই মধ্যে সন্তানের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে গিয়ে বিক্রি করেছেন নিজেদের শেষ সম্বল দুটি গরু। খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রয়োজন আরও ৮০ হাজার টাকা, যা জোগাড় করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
মাসুমের মা মোরশেদা বেগম বলেন, “এর আগে অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে হাটবাজারে হাত পাততে হয়েছে। এখন আর উপায় নেই। দিনমজুর স্বামীর আয় দিয়ে সংসারই চলে না, চিকিৎসা চালানো তো দূরের কথা। মানুষ আর কত সহযোগিতা করবে?”
প্রতিবেশীরা জানান, এলাকাবাসী স্বাধ্যমতো সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু বর্তমানে পরিবারের অবস্থা এমন হয়েছে যে তারা বাড়িভিটাও বিক্রির উপক্রম।
এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে মাসুম বিল্লাহকে প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করা হয়েছে। সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজমুল হাসান বলেন, “আমরা তাকে সরকারি সহায়তার আওতায় এনেছি। ভবিষ্যতে যদি অতিরিক্ত অনুদানের সুযোগ থাকে, অবশ্যই চেষ্টা করব।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক জানান, “আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আবেদন এলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করা হবে।”
এখন দরকার সমাজের সহৃদয় ও বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসা। এই শিশুটি যদি চিকিৎসা না পায়, তবে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে—আর পরিবারের সামনে দাঁড়াবে আরও বড় বিপর্যয়।