Thursday, May 1, 2025
Homeঠাকুরগাঁওঠাকুরগাঁওয়ে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

ঠাকুরগাঁওয়ে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

আব্দুল আউয়াল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ে গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। সারি সারি আম গাছে এখন সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের সোনালী স্বপ্ন। আম চাষিরাও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন,এবার আমের ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া, মিলন পুর গ্রামের আমবাগান মালিক ইয়াছিন আলী মাস্টার বলেন, শুধু ধান ও গম চাষ করে তেমন লাভ নেই। প্রায় দুই একরের বেশি জমিতে বারি-৪ জাতের আমগাছের বাগান করেছি। এ বাগানে কম-বেশি পাঁচশ’র বেশি আমগাছ রয়েছে। এ বারি-৪ জাতের আমগাছ একটানা ২৫ থেকে ৩০ বছর ফল দিয়ে থাকে। এ বাগান করতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো। এই জাতের আমগাছ থেকে গাছ লাগানোর পর দুই বছরের মধ্যে আম ধরে। গত কয়েক বছর আমার বাগানে আম ধরছে। গতবারের চেয়ে এবার বাগানে বেশি মুকুল এসেছে। এ জাতের দু-তিনটা আমের ওজন এক কেজি হয়। আম পাকে আশ্বিন মাসের শেষ দিকে। তখন এই আম প্রতি কেজিতে বিক্রি হয় ২০০-২৫০ টাকা। বিগত বছরে বাগানে আলু ও শাক, হলুদ, আদা ও সবজি আবাদ করছি। গত বছর সময়মতো কীটনাশক ছিটিয়ে ও পরিচর্যা করে ভালো ফলন ও দাম পেয়েছি। এবারও তাই করব।

ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার ভাবনাঞ্জ এলাকার আমবাগান মালিক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার বাগানে ৩০০টির বেশি আমগাছ রয়েছে। আমার বাগানের বেশিরভাগ আম গাছ সূর্যপুরী ও আম্রপালি। আমগাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। ধান ও অন্যান্য ফসল থেকে আম ও লিচুর বাগান করে লাভ বেশি। এতে পরিশ্রমও কম হয়। বাগানে আম একটু বড় হলে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিই। গত বছর আমি এ বাগান থেকে পাঁচ লাখ টাকার মতো লাভ করছি। তাছাড়া সূর্যপুরী ও আম্রপালি আম-লিচু একটি জনপ্রিয় ও রসালো ফল। দেশে-বিদেশে আমের খুবই চাহিদা রয়েছে। এতে আমার টেনশন কম থাকে। তাছাড়া আমবাগানের পাশাপাশি কৃষি ফসল হিসেবে শাকসবজিও আবাদ করা যায়।

ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার চাষি সাইফুর রহমান বাদশা বলেন, শুধু ধান ও পাট আবাদ করে তেমন লাভ পাই না। তাই আম বাগান করছি। বাগানে কম-বেশি তিনশ’র বেশি গাছ রয়েছে। অধিকাংশ গাছ আম্রপালি, সূর্যপুরী ও ল্যাংড়া জাতের। আমগাছে এবার ভালো মুকুল এসেছে। গত বছর সময়মতো কীটনাশক ছিটিয়ে ও পরিচর্যা করে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, প্রতি বছরই তার বাগান থেকে সারাদেশে আম সরবরাহ করেন। তার মতো অনেক বেকার যুবক এখন বাণিজ্যিকভাবে আম্রপালি আমের বাগানের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এসব বাগানে গাছ লাগানোর দু-তিন বছরের মধ্যেই আম পাওয়া যায়। লাগাতার ফল দেয় ১০-১২ বছর। ফলনও হয় ব্যাপক।

ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক বাগান মালিক বলেন, গত বারের মতো এবারও আমের মুকুল ভালো এসেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আমের সর্বোচ্চ ফলন হবে বলে তারা আশা করেন।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার সূর্যপুরী আম সারাদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। এখানকার আমে পোকা থাকে না। এটা এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। আমের আকার দেখতে ছোট হলেও স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং কালবৈশাখি বা ঝড় না হলে ব্যাপক ফলন আশা করা যায়।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর