আনোয়ার হোসেন, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া যুবক সিজু মিয়ার মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। পরিবারের দাবি, এটি দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সিজুর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে জেলা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, সিজু একজন সুস্থ ও সচেতন যুবক ছিলেন। তার মৃত্যু পানিতে ডুবে নয়, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলমকে অভিযুক্ত করে দ্রুত তাকে প্রত্যাহার ও গ্রেফতারের দাবি জানান।
সন্ধ্যায় বিক্ষোভ চলাকালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে রাস্তা ফাঁকা করার অনুরোধ জানালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল আলম আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা পুলিশ সুপারের সরাসরি উপস্থিতির দাবি জানালে পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা ঘটনাস্থলে এসে নিহত সিজুর মা ও স্বজনদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে, শুক্রবার সকালে সাঘাটা থানার পাশে সাঘাটা হাই স্কুলের পুকুর থেকে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মোবাইল ফোন হারানো সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে থানায় আসেন সিজু। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় তাকে জিডি করতে দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণ পর ছুরি হাতে থানায় ঢুকে এএসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করেন এবং পরে পুকুরে ঝাঁপ দেন বলে দাবি পুলিশের।
ঘটনার পরদিন সকালে রংপুর থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তার মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ পাওয়া গেছে, তবে ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য জানতে তদন্ত চলছে।
এদিকে, সিজুর জানাজার পূর্বে গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের আমির এক বক্তব্যে তাকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী দাবি করে বলেন, “সিজু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো বলেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”