Monday, June 16, 2025
Homeসারাদেশন্যাশনাল টি কোম্পানীর চা শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছে না

ন্যাশনাল টি কোম্পানীর চা শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছে না

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

চা পাতা তোলার জন্য চা গাছকে ছেঁটে যেমন ২৬ বা ২৮ ইঞ্চি করে রাখা হয়, তেমনি চা শ্রমিকদের জীবনের স্বপ্নকেও বড় হতে দেয়া হয় না। চা শিল্পের বয়স প্রায় ২০০ বছর হলেও চা শ্রমিকদের মজুরি এখনো ১৭০ টাকা। আর সংসারের চাকা ঘুরে এই মজুরিতে। কিন্তু, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চা বাগানগুলোতে নিয়মিত কাজ করেও মজুরি পাচ্ছেন না তারা। আসন্ন দুর্গাপূজায় উৎসব বোনাস পাবেন কিনা সেটা নিয়েও শঙ্কিত চা শ্রমিকরা।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে কমলগঞ্জে এনটিসির মালিকানাধীন শ্রমিকরা চা বাগানে নিয়মিত কাজ করলেও মজুরি দিতে পারছে না বাগান কর্তৃপক্ষ। সরকার পতনের পর মাত্র দুই সপ্তাহ মজুরি পেয়েছিলেন তারা।

মালিকপক্ষ জানান, সরকার পতনের পর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বোর্ড ভেঙে যাওয়ায় মজুরি দিতে পারেননি না তারা। তবে দুর্গাপূজার আগেই মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্যমতে, কমলগঞ্জে এনটিসির মালিকানাধীন ৮টি চা বাগান রয়েছে। এগুলো হলো পাত্রখোলা চা বাগান, চাম্পারায় চা বাগান, কুরমা চা বাগান, কুরঞ্জি চা বাগান, বাঘাছড়া চা বাগান, মদন মোহনপুর চা বাগান, মাধবপুর চা বাগান এবং পদ্মছড়া চা বাগান। এই ৮টি চা বাগানে প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক চা বাগানে কাজ করেন। আর তাদের মজুরির ওপর ভরণপোষণ নির্ভর করে আরও প্রায় ২০ হাজার মানুষের।

নারী চা শ্রমিক ময়না রাজভর বলেন, মজুরি বন্ধ থাকায় এখন ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। চাল, ডাল, তেল সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বাকিতে কিনতে হচ্ছে। যদি দোকানী বাকিতে জিনিস দেওয়া বন্ধ করে দেয় তবে সমস্যায় পড়বো।

আরেক চা শ্রমিক নমিতা কুর্মি বলেন, চারজনের সংসার চলে বাগানের পাওয়া মজুরিতে। এখন তাও বন্ধ। দুর্গাপূজা আসছে, এখন উৎসব বোনাস পাবো কিনা সেটাও জানিনা।

আমাদের শ্রমিকেরা মজুরি না পাওয়ায় খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন জানিয়ে পদ্মছড়া চা বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কৃষ্ণলাল দেশোয়ারা বলেন, আমাদের কমলগঞ্জের এনটিসির সব বাগানেই একই অবস্থা।

সরকার পতনের পর মাত্র দুই সপ্তাহ শ্রমিকেরা মজুরি পেয়েছিলেন জানিয়ে কুরমা চা বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নারদ পাসী বলেন, সামনে দুর্গাপূজা। আমরা মালিকপক্ষের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত যেনো মজুরির ব্যবস্থা করা হয়।

সাবেক বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি জানান, আমরা প্রতিদিনই মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। শ্রমিকরা যদি পূজার আগে মজুরি বোনাস না পায় তাহলে কঠোর আন্দোলন সংগ্রামে যাবে। এতে করে চা বাগানেরই ক্ষতি।

ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) জিএম এমদাদুল হক জানান, সরকার পতনের পর আমাদের বোর্ড প্রায় ভেঙে গেছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে চা বাগানগুলোতে মজুরি ও পূজার বোনাস দেওয়া হবে।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর