Friday, June 13, 2025
Homeলালমনিরহাটপশুরহাটের জন্য টিফিনের পর স্কুল ছুটি, উদ্বোধন করলেন বিএনপির নেতা বাবুল

পশুরহাটের জন্য টিফিনের পর স্কুল ছুটি, উদ্বোধন করলেন বিএনপির নেতা বাবুল

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

এ কে এম কায়সারুল আলম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে বিদ্যালয় মাঠে বসানো হচ্ছে গরুর হাট ও বাজার। এজন্য প্রতি বুধবার হাটের দিন টিফিনের পর স্কুল ছুটি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন মাঠে বসানো হচ্ছে বাজার।

সম্প্রতি ওই স্কুলমাঠে হাট বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল। এদিকে ওই স্কুল মাঠে হাট-বাজার না বসানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নির্দেশনা জারি করে গত ২৫ এপ্রিল ইজারাদার ও শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এক মাস পেরিয়ে গেলেও ইজারাদার হাট স্কুল মাঠ থেকে অন্যত্রে সরিয়ে নেননি। উল্টো হাট সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইউএনওর নির্দেশনার পাওয়ার কথা অস্বীকার করেন ইজারাদার।
জানা গেছে, চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এলাকায় এক মাঠে পাশাপাশি দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং অপরটি শিয়ালখোওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২৩ জন এবং কলেজে ৬৫০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এ ছাড়া পাশেই রয়েছে কেজি স্কুল ও একটি মাদ্রাসা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওই মাঠেই খেলাধুলা করে আসছিল।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, গত ১৬ এপ্রিল থেকে হাটের ইজারাদার প্রভাব খাটিয়ে ওই স্কুল মাঠে হাট বসাচ্ছেন। সপ্তাহে প্রতি শনিবার ও বুধবার হাটের মূল দিন। এ ছাড়া সপ্তাহের বাকি পাঁচদিনও মাঠে বাজার বসে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত বছর তারা আন্দোলন করে মাঠটিকে হাটমুক্ত করেছিল এবং নিয়মিত খেলাধুলা করার সুযোগ পেয়েছিল। তখন বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ছিল। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল থেকে আবার হাট বসায় শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে এবং তারা খেলাধুলা করতে পারছে না।

শিয়ালখোওয়া হাটের ইজারাদার আসাদুল হক হিরু বলেন, স্কুল মাঠ থেকে হাট অন্যত্রে সরিয়ে নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কোনো নির্দেশনাপত্র পাইনি । হাটের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে। গত বছর স্থানীয় দ্বন্দ্বের কারণে স্কুল মাঠে হাট বসেনি।

তিনি দাবি করেন, স্কুল মাঠে হাট বসানোর পক্ষে ৯৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে এবং এই হাট স্থানীয় অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি নিয়ম মেনে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে স্কুল মাঠে হাট বসাচ্ছি।

শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাসেম আলী বলেন, শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য স্কুল মাঠকে হাটমুক্ত রাখা জরুরি । তিনি আক্ষেপ করে বলেন,আমাদের স্কুল মাঠে হাট বসানো হচ্ছে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি।

লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইও) মুজিবুর রহমান জানান, ইউএনওর পক্ষ থেকে ওই স্কুল মাঠে হাট হাজার বসানো বন্ধের কোনো নির্দেশনাপত্র পাইনি। তবে এরই মধ্যে অনেক স্কুল মাঠ থেকে হাট সরানো হয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জরুরি ভিত্তিতে স্কুল মাঠ থেকে হাট অপসারণে উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা হাট ইজারা দিয়েছি, স্কুল মাঠ ইজারা দিইনি। ওই স্কুলমাঠ থেকে হাট বাজার সরানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে ইজারাদারকে পত্র দিয়েছি। হাট সরিয়ে না নিলে শিগগিরই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর