অনিল চন্দ্র রায়,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ফুলশয্যার রাতেই স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নববধূ লাভনী আক্তার (২০)। ফুলশয্যা রাতেই বরের মৃত্যুর বিষয়টি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না নববধূ। শুক্রবার বিকালে মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি ও অশ্রু ভেজা চোখের অপলক দৃষ্টিতে শেষবারের মতো মৃত বর (স্বামী)কে বিদায় জানালেন নববধূ লাভনী আক্তার।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১মে) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলী আক্তার (২০) এর সাথে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউট এর সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে আপ্যায়নসহ নানা আনন্দ ও উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়াও শেষে আত্মীয় স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে রব খালেকুজ্জামান ডিউট বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২ টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং পানি চাওয়া মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মেঝেতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেলে নিশ্চিত হন হৃদ্রোগে তার মৃত্যু হয়েছে।
নববধুর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, জামাই খালেকুজ্জামান ডিউট প্রায় ১৮ থেকে বছর আগে প্রথম বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্ত্রী জান্নাতি আক্তার মুক্তা। তার ঘরে ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কে জানতো বিয়ের রাতেই আমার জামাইয়ের মৃত্যু হবে। অল্প বয়সে আমার ভাতিজি বিধবা হলেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। সবই নিয়তির খেলা।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া শোহেল প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান ডিউট এর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিয়তির ওপরে তো কারো হাত নেই। তবে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। শুক্রবার বিকাল ৩ টায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।