মোজো ডেস্কঃ
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযানের অংশ হিসেবে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সন্দেহে অন্তত ৪৪৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া অভিযানে আটককৃতদের নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে রাজ্যের একটি বিশেষ আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
বুধবার দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজ্যের ঝাড়সুগুদা জেলায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৪৪৪ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া পৃথক অভিযানে বাংলাদেশি সন্দেহে জগৎসিংহপুর থেকে আরও ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা দুই সপ্তাহ আগে প্যারাদ্বীপে এসেছিলেন।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, ঝাড়সুগুদায় আটক ৪৪৪ জনের মধ্যে অনেকে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান, খনি, নির্মাণ ও ঘর রঙ করার কাজের মতো বিভিন্ন ধরনের পেশায় যুক্ত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওড়িশা রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় পুলিশের মহাপরিদর্শক হিমাংশু কুমার লাল বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক সন্দেহভাজন ৪৪৪ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে বর্তমানে আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
ঝাড়সুগুদার পুলিশ সুপার স্মিত পারমার বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজ্যে অবৈধ বসবাসরত বিদেশিদের শনাক্ত করার জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স (এসটিএফ) গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘জেলা পুলিশের বিভিন্ন শাখা অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৪৪৪ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছে এসটিএফ। তাদের নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দুটি আটককেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।’’
সম্প্রতি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আটককেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশনার ভিত্তিতে রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিদের শনাক্তের অভিযান জোরদার করেছে ওড়িশা সরকার। গত ২৯ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী ১৮ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করে কেন্দ্রপাড়া পুলিশ। পরে তাদের আটকের পর সেখানকার একটি আটককেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে, গত মার্চে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি বিধানসভায় বলেন, রাজ্যে মোট ৩ হাজার ৭৩৮ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ১ হাজার ৬৪৯ জন কেন্দ্রপাড়ায়, ১ হাজার ১১২ জন জগৎসিংহপুরে, ৬৫৫ জন মালকানগিরিতে, ১৯৯ জন ভাদ্রাকে, ১০৬ জন নবরংপুরে এবং ১৭ জন ভুবনেশ্বরে বসবাস করছিলেন।
সূত্র: দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।