ফয়সাল হক, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কয়েকদিন হতে ভ্যাপসা গরমে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মান। এই গরমে রোগের সংক্রমণ বেড়েছে অনেক। গত ৬ দিনের ব্যবধানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন নারী পুরুষ ও শিশু সহ ৩৯২ জন। এদিকে কলেরা স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে হাসপাতালটিতে। এমন গরমে চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষ ও রোগীদের সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যাপসা গরমজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই। তবে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ও তার স্বজনদের দাবি হাসপাতাল থেকে স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে স্যালাইন। এতে হতদরিদ্র পরিবারের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
এসময় ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী আব্দুর রহমানের স্বজন রেহেনা জানান, পাতলা পায়খানা, জ্বর এজন্য তাকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল থেকে ভর্তি এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হয় নাই, বাইরে থেকে কিনে দিতে হচ্ছে।
সাধারণ ওয়ার্ডের রোগী আব্দুল মজিদ কাশিমবাজার থেকে আসছে। তিনি রোববার থেকে ভর্তি। থানাহাট ইউনিয়নের ঠগের হাট স্মৃতি বেগম হঠাৎ করে মাথা ব্যথা শরীর দুর্বল এজন্য হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১০ জুন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭১ জন রোগী, ১১ ও ১২ তারিখ ৬২ জন করে, ১৩ জুন একটু কমলেও চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৮ জন। এরপর ধারাবাহিক ভাবে ১৪ ও ১৫ জুন ৬৮ ও ৭১ জন নারী পুরুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। এই কয়েকদিনে কলেরা স্যালাইন সরবরাহ হয়েছে ৬০ টি, রোগীর তুলনায় যা ছিল সীমিত।
চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোরকিপার (ভারপ্রাপ্ত) মো. নাসির উদ্দিন জানান, ৫ দিনে ৬০ টি কলেরা স্যালাইন শেষ। ডিএ, হার্টম্যান ও কলেরা স্যালাইন এবং ট্যাবলেট হিসটেসিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আগামী পরশুদিন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড বগুড়া থেকে আনা হবে।
চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু রায়হান বলেন,
তীব্র গরমে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, গরমের পাশাপাশি এই ইদে গরুর মাংস খাওয়া পর থেকে পেট ব্যথা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদিকে গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। এসময় বেশি বেশি করে ওরস্যালাইন, আখের রস, ডাবের পানি খেতে হবে। স্যালাইন সরবরাহ না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় স্যালাইন সংকট রয়েছে। আগামী শনিবার থেকে স্যালাইন সরবরাহ করা হবে।