Friday, May 2, 2025
Homeপঞ্চগড়রাজস্ব আদায় কমেছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে

রাজস্ব আদায় কমেছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

দেশের উত্তরের প্রবেশদ্বার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অবস্থিত চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান) বাংলাবান্ধায় রাজস্ব আদায় কমে গেছে।

চলমান ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, বন্দর অভ্যন্তরে প্রয়োজন অনুযায়ী অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া ও বিভিন্ন সময় ভারত থেকে উল্লেখযোগ্য হারে পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় বন্দরটিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কমে গেছে।

বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। এ বন্দরে এই অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বিশেষ করে ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ বন্দরে গত অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। এ বন্দরে এই অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ বন্দরে গত অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আদায় হয়েছিল ৬৪ কোটি ০৭ লাখ টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয় ৬১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।


বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছর জুড়ে ডলার সংকট, এলসি জটিলতা ও পণ্য আমদানিতে ধীরগতি সমস্যা না থাকলে এ বন্দরে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় হতো।

বাংলাবান্ধা বন্দরের তথ্যমতে, ১৯৯৭ সালে ১ সেপ্টেম্বর নেপাল এবং ২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে শুরু হয় ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যক্রম। ২০১৬ সালে এই বন্দরে ইমিগ্রেশন চালু হয়। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ভুটান থেকে পাথর আমদানির মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্থলবন্দরের সঙ্গে চতুর্দেশীয় ব্যবসা কার্যক্রম। বিপুল পরিমাণ রাজস্বও আয় হচ্ছে এই বন্দরের মাধ্যমে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর, মেশিনারিজ, প্লাস্টিক, ভুট্টা, অয়েল কেক (খৈল), আদা, গম, চাল, ফল ইত্যাদি আমদানি হয়। নেপাল ও ভুটান থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। একইভাবে দেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্ট সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, পার্টস, কটনব্যাগ, ওষুধ ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন দ্রব্য রফতানি হচ্ছে।

বাংলাবান্ধা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডলার সংকট, এলসি জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে উল্লেখযোগ্য হারে পণ্য আমদানি কমে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। বছর জুড়ে ডলার সংকট, এলসি জটিলতা ও পণ্য আমদানি ধীরগতি সমস্যা না থাকলে এটি হতো না। এ বন্দরে বিগত কয়েক অর্থ বছর ধরে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় হয়ে আসছে।

বাংলাবান্ধা আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত ই খুদা মিলন জানান, বর্তমানে ডলার সংকটসহ সৃষ্ট কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ায় আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমেছে। অথচ মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে অর্থনীতির মন্দাতে বাংলাবান্ধা বন্দরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আয় হয়েছে। তাই এই বিদ্যমান সমস্যা নিরসন ও বন্দরের অবকাঠামোসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য মহাপরিকল্পনা প্রয়োজন। সেটি পূরণ হলে সম্ভাবনাময়ী এ বন্দর দিয়ে শতশত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব।

 

বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে ডলার সংকটের কারণে আমদানি কমে গিয়েছিল। গেল বছর ডলার সংকটের কারণে জুলাই-আগস্ট পাথর আমদানি ছিল। এ কারণে রাজস্ব আদায় কমতে পারে। বর্তমানে আমদানি-রফতানির পরিমাণ আগের চেয়ে কিছুটা কম হচ্ছে। আগের মত সব পণ্য আমদানি-রফতানি হলে আবারো প্রাণ ফিরে পাবে বন্দরটি।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম জানান, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় একটি চতুর্দেশীও সংযোগস্থল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর রয়েছে। আমাদের এখানে গত অর্থ বছরে রাজস্ব একটু কম আদায় হলেও এবছর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে আশা করছি, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা যেটা রয়েছে সেটা অর্জন করা সম্ভব হবে।

– পঞ্চগড়, প্রতিনিধিঃ

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর