মোস্তাফিজুর রহমান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় কর্তব্যরত এএসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে রাইফেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায় এক যুবক। পরে পালানোর সময় সে একটি পুকুরে ঝাঁপ দিলে রাতভর তল্লাশি শেষে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্য ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১০টার দিকে সাঘাটা থানা ভবনের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক হঠাৎ থানার ভেতরে ঢুকে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীর ওপর অতর্কিতভাবে ছুরি দিয়ে আঘাত করে এবং তার রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় মহসিন আলীর চিৎকারে থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে যুবকটি পালিয়ে পাশের সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে ঝাঁপ দেয়। পুকুরটি কচুরিপানায় আচ্ছাদিত থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
আহত এএসআই মহসিনকে উদ্ধার করে দ্রুত সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, যেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা রাতভর তল্লাশি চালায়। পরদিন শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ডিঙি নৌকার সাহায্যে পুকুর থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশ নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে। তার নাম মো. সিজু মিয়া (২৫), বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুড়িয়া গ্রামের দুলালা মিয়ার ছেলে।
এ বিষয়ে সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাদশা আলম বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ঘটনার উদ্দেশ্য ও পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর বিভাগের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত আনজেলা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুন্ড।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিদ্রোহ কুমার কুন্ড গণমাধ্যমকে বলেন, “ঘটনাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। এই যুবক একা ছিল কিনা, উদ্দেশ্য কী ছিল—সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
থানার মতো নিরাপত্তাবেষ্টিত স্থানে এমন ঘটনা ঘটায় সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ আশ্বস্ত করেছে, পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।