মোঃআব্দুল্লাহ আল মামুন ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
আওয়ামীলীগের বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ নেই, খুনী হাসিনার ফিরে আসার সুযোগ নেই, আসলে একটা কারনে আসবে সেটা বিচারের কাঠগড়ায় দাড়ানোর জন্য। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি ২৬ মে সোমবার নীলফামারী জেলার ৬ টি উপজেলা সফরের প্রথমভাগে ডোমার উপজেলার বাস ষ্টান্ডে অনুষ্ঠিত এক পথ সভায় এ মন্তব্য করেন।
খুনী হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হাজারের ও উপর মায়ের বুক খালি করেছে দাবী করে সারজিস বলেন, ওই খুনীর বিচার বাংলাদেশে হওয়া উচিত, ওই খুনীর বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের জায়গা থেকে যেন চিন্তা না করে অন্য কারো হাতে দায়িত্ব দিয়ে চলে যাবে। আমরা এই বাংলাদেশে ওই খুনীর বিচার দেখতে চাই। আমরা এই বাংলাদেশে যে আশাগুলোকে সামনে রেখে এত যে তরুন রক্ত দিল সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার দেখতে চাই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে বিভাজন তৈরী করে এমন কোন অযৌত্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক কথা যেন না বলি। এখন সরকারে যারা আছে তারা সরাসরি কোন দলের প্রতিনিধি না। তারা গন-অভুঙ্থানের প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শক্রমে তারা সরকারে জায়গা করে নিয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন দ্রুত দিতে হবে এটা কথা হতে পারে না, বরং কথা এটা হতে পারে যে নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুষ্ট হওয়ার জন্য সামগ্রিক প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করে বিচার এবং সংস্কার শেষে নির্বাচন হতে হবে।
বিগত সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন বানিজ্য সম্পর্কে বলেন, আমরা দেখেছি আগে এমপিরা টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনত। তারা দলীয় প্রভাবে নির্বাচিত হত এবং জনগনের কথা চিন্তা না করে তার উপরে যে নেতা তাকে তেল দিয়ে ও মেইনটেন করতে তার দিন যেত। কিন্তু জনগনের দিকে খেয়াল করার সময় পায় নি। এসব নেতারা নির্বাচনের আগে জনগনের পকেটে ৫০০/১০০০ টাকা ঢুকিয়ে দিয়ে জনগনকে প্ররোচিত করত এবং নির্বাচনের পরে সকল সেবায় ও সুযোগ সুবিধা দেয়ার নামে হাজার হাজার টাকা জনগনের পকেট থেকে নিয়েছে। তিনি আগামী নির্বাচনে দল মত না দেখে ভাল মানুষকে নির্বাচিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। ভাল মানুষকে ভাল এবং খারাপ মানুষ খারাপ বলার মানসিকতা নিয়ে খারাপ মানুষকে ছুড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে আওয়ামীলীগ আমলের মত রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি শুরু হবে বলে আশংকা করেন। তিনি নারী সমাজকে জাতির অর্ধেক অংশ তাই ভাল মানুষ নির্বাচনে তাদের সমর্থন আশা করেন। সরকারী অফিসগুলো দুর্নীতি বিস্তার রোধে তিনি তাদের ব্যাপারে জনসম্মুখে প্রকাশ করার উদাত্ত আহ্বান জানান। সরকারী যত বড় আমলায় হোক জনগনকে ভয় দেখায়, অন্যায় করলে তারও বিচার দাাবী করেন তিনি। বিগত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন কে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া হয়েছে, অথচ ওটাই ছিল দুর্নীতি’র আখড়া।
বিগত সময়ে হাসিনা রাজনৈতিক কালচার ধংস করেছেন, খারাপ ভাষা ব্যাবহার করেছেন উল্লেখ করে কোন দলের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, এখন দেখেছি একটি রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতারা একই ভাষা ব্যাবহার করছেন। এটা কোন রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না বলে তিনি দাবী করেন। যে ভাষায় এতদিন আপনাদের উপর জুলুম করা হয়েছে, সেই ভাষার চর্চা এখন শুরু করলে জনগন তাদের ছুড়ে ফেলবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারন করেন তিনি।আপনারা যদি ওই কালচার প্রয়োগ করেন, তরুন প্রজন্ম এই কালচার আর সেট করতে দিবে না। তিনি এসব নেতাদের উদ্দেশ্য বলেন, কথা বলার সময় সাবধানে কথা বলবেন,আপনার ভাষা ঠিক করবেন। আপনারা আমাদের মুরব্বি। এভাষায় কথা বললে আপনারা আমাদের থেকে শ্রদ্ধা বা সম্মান পাবেন না। আগামীর বাংলাদেশ পারস্পারিক শ্রদ্ধা সম্পর্কের বাংলাদেশ বিনির্মানে যোগ্য লোকের যোগ্য জায়গায় প্রতিষ্ঠা এবং ভালো’র সাথে থেকে খারাপকে তিরস্কারের আহ্বান জানান। এর আগে তিনি উপজেলা শহরে বৃষ্টিতে ভিজে গন-সংযোগ করেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক, সারোয়ার তুষার, ড. আতিক মুজাহিদ, আলী নাছের খান, সাদিয়া ফারজানা দিনা, আসাদুল্লা আল গালিব, আবু সাঈদ লিওন প্রমুখ।