ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা চতুর্দেশীয় স্থলবন্দরে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আবারও পুরোদমে পণ্য পরিবহণ শুরু হয়। এতে বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের ছুটির কারণে গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত বন্দরের সকল প্রকার আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। তবে এ সময়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াতে কোনো প্রকার বিঘ্ন ঘটেনি। ঈদের ছুটিতেও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ছিল সম্পূর্ণরূপে চালু।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, “ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের ছুটিতে ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে আগেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ জুন থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট চার দেশের কাস্টমস, ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে আগেই লিখিতভাবে অবহিত করেছি। ফলে পুনরায় কার্যক্রম শুরুতে কোনো জটিলতা হয়নি।”
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন বলেন, “ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে আজ সকাল থেকেই বন্দর এলাকায় আবারও কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ট্রাক আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা স্বস্তি অনুভব করছি।”
তিনি জানান, এ বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ মূলত ভারত ও নেপাল থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে, আবার দেশীয় কৃষিপণ্য ও তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করা হয়। ঈদের আগে বন্ধ থাকায় অনেক পণ্যের চালান আটকে ছিল, যা আজ থেকে ধাপে ধাপে ছাড় করা হবে।
বাংলাবান্ধা দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই বন্দরটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহনের জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। স্থলবন্দরের নিয়মিত কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে চার দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও গতিশীল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ কবীর বলেন, “আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকলেও ঈদের ছুটিতে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল। প্রতিদিন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার যাত্রী পারাপার অব্যাহত ছিল। ইমিগ্রেশন কার্যক্রমে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।”