Wednesday, June 18, 2025
Homeদিনাজপুরদিনাজপুরে ৬ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

দিনাজপুরে ৬ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মোঃ আসতারুল আলম, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরে ৬ কোটি টাকার ঋণ প্রদান নিয়ে দোষী ব্যাংক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমি (বিএসডিএ) এর নির্বাহী পরিচালক ড.মো আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী বিএসডিএ’র সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা।

আজ শুক্রবার (২৩ মে) সকাল ১১ টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএসডিএ’র তৎকালীন কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ কিবরিয়া।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেছেন,সোনালি ব্যাংক পিএলসি, কর্পোরেট শাখা, দিনাজপুর,ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গণেশতলা, সদর,দিনাজপুর, সাউথইস্ট ব্যাংক, সদর, দিনাজপুর, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, সদর, দিনাজপুর,ট্রাস্ট ব্যাংক, সদর, দিনাজপুর ও মিডল্যান্ড ব্যাংক, বগুড়া শাখাসহ বিভিন্ন ব্যাংক বিএসডিএ-এর অনুকূলে অন্তত ৬ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছেন। এসব ঋণে আর্থিক অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে আমাদেরকে ভুয়া কো-বরোয়ার ও গ্যারান্টার বানিয়েছেন বিএসডিএ এর নির্বাহী পরিচালক। এসব ঋণের দায় অন্যায়ভাবে আমাদের ওপর চাপিয়ে আবার মামলাও করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন,বিএসডিএ-এর সদস্য ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে আমরা কিছু সময় দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা ২০১৯ সালে এই সংগঠনে যুক্ত হবার প্রাক্কালে এই সংগঠনটি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং সহস্রাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করে আসছিল। এমন সময়ে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুস ছালাম এই সংগঠনের সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে আমাদের জড়িত করার প্রস্তাব করলে আমরা কেহই রাজি ছিলাম না। পরে তার অনুরোধে বিনা পারিশ্রমিকে সমাজসেবার মানসে এই সংগঠনের সঙ্গে আমরা জড়িত হই। ড. আব্দুস ছালাম সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিবরণ দিয়ে বলেছেন ‘বিএসডিএ-পর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দায়-দেনা সংক্রান্ত কোনো দায় কার্যকরী পরিষদের ওপর বর্তাবে না’।

গঠনতন্ত্রেও এ বিষয়ে কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের উপর সুনির্দিষ্ট কোনো দায় উল্লেখ নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আর্থিক দায়-দেনা সংক্রান্ত বিষয়ে সংগঠন ও নির্বাহী পরিচালক দায়ী থাকবেন। এবিষয়ে পরবর্তী সময়ে তিনি কয়েকজনকে লিখিত প্রত্যায়নপত্রও দিয়েছেন।

সাবেক এই ভুক্তভোগী কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করি আমারদেরকে কো-বরোয়ার ও গ্যারান্টার করে ৬ কোটির অধিক টাকা ঋণ গ্রহণ করে খেলাফি হয়েছেন। অথচ কোনো ব্যাংকের কোনো ঋণ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে এবং দায় দেনা সংক্রান্ত দলিলে আমরা স্বাক্ষর করিনি। এসব ঋণ প্রদানে কোনো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের ডাকেননি, আমরা তাদের কোনো ঋণ সংক্রান্ত নথিপত্রে বা দলিলে স্বাক্ষরও করিনি এমনকি ব্যাংকেও যাইনি। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এসব ঋণ প্রদানে আর্থিক অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে আমাদেরকে ভুয়া কো-বরোয়ার ও গ্যারান্টার বানিয়ে বিএসডিএ অনুকূলে প্রতিটি ব্যাংক ১ কোটি করে অন্তত ছয়টি ব্যাংক ৬ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছে। পরবর্তী সময়ে বিএসডিএ এই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে এসব ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করেছে। অন্যগুলোর মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ব্যাংক ইচ্ছে মত্যে যখন যাকে ইচ্ছে এই ঋণে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। উল্লিখিত ব্যাংকসমূহ ঋণ প্রদানের পূর্বে এবং ঋণ প্রদানের সময় নির্বাহী পরিচালক ছাড়া কার্যকরী পরিষদের কারও সাথে যোগাযোগ করেননি এবং কো-বরোয়ার ও গ্যারান্টার পত্রে তারা স্বাক্ষর করেছেন কিনা তাও যাচাই করেননি। যদি করতেন, তাহলে ‘চাল নেই চুলা নেই’ এমন অসহায় রহিমা ও দিনমজুরের স্ত্রী মোছাঃ গোলেনুরের মতো অসহায়দেরকে কোটি কোটি টাকার ঋণে অন্তত জড়াতেন না। যারা পদত্যাগ করেছেন বা যারা কমিটিতে ছিলেনই না তাদেরকেও তারা জড়িয়েছেন। এসব ঋণের বিষয়ে চেয়ারম্যানসহ কমিটির কেউই জানেন না বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছি। একদিকে সংসারের অভাব অনটন, অন্যদিকে মামলার খরচাদি। এসব কারণে পারিবারিক অশান্তিও শুরু হয়েছে। অন্যদিকে বিএসডিএ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে আমানত গ্রহণকালে কমিটির কোনো কোনো সদস্যকে সাক্ষী বানিয়েছে। বিএসডিএ-এর নির্বাহী পরিচালক এখন পলাতক থাকায় আমানতকারীরা জামানত উদ্ধার করতে না পেরে সাক্ষী হিসেবে তাদের দুই একজনের বাড়ি ঘরে আক্রমণ পর্যন্ত করেছেন। এমনকি গায়েও হাত তুলেছেন আবার তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের কিছু অংশ নিয়েও গেছেন এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছেন।

একদিকে আমাদের না জানিয়ে, আমাদের স্বাক্ষর জাল করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে আবার সেই অর্থঋণেই আমাদের বিরুদ্ধে শতভাগ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে আমরা মানসিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আবার জালিয়াতির বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয়ও গ্রহণ করতেও পারছি না। আমাদের সংশ্লিষ্টতা বিহীন ঋণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও বিএসডিএ-এর নির্বাহী পরিচালক জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে আমাদের জড়িত করে এই ঋণ প্রদান ও গ্রহণ করে আমাদের ফাঁসিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে এসব ঋণের বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যাংক কর্মকর্তা ও বিএসডিএ-এর নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করেছেন ভুক্তভোগী বিএসডিএ’র সাবেক কর্মকর্তারা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগীদের পক্ষে বিএসডিএ’র তৎকালীন চেয়ারম্যান মোসা. ইসমত আরা, তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ছায়েদ আলী, পরবর্তী ভাইয়ের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম,তৎকালীন কার্যনির্বাহী সদস্য মো.আবু হাসান আলী,নবীউল আহসান,মোছাঃ রহিমা,মোছাঃ গোলেনুর,সুলতানা পারভীন মেরী।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর