নুরুল আমিন ভূরুঙ্গামারী( কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযাহা উপলক্ষ্যে জমে উঠেছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম জেলার তিন দিকে সীমান্ত বেষ্টিত ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একমাত্র কোরবানির পশুর হাট।
এবার ঈদুল আযাহাকে কেন্দ্র করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চাহিদার তুলনায় বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। শেষ মুহূর্তে পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার খামারিরা। তবে পশু লালন পালনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা ।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় কোরবানির জন্য ৩১ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় পশুর চাহিদা রয়েছে ২২ হাজার। এর মধ্যে গরু, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। অতিরিক্ত ৭ হাজার পশু দেশের অন্য জেলা উপজেলার চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
২৭মে মঙ্গলবার দুপুরে ভূরুঙ্গামারী গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির পশু দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে আছে হাট। হাটে ছোট-বড় ও মাঝারি সাইজের প্রচুর গরু বিক্রির জন্য আনা হয়েছে।
দাম স্বাভাবিক থাকায় অনেকেই পছন্দের পশু কিনে বাড়ি ফিরছেন। ভারতীয় গরু না থাকায় বিক্রেতারাও খুশি। সপ্তাহে ২ দিন শনিবার ও মঙ্গলবার বসে উপজেলার একমাত্র পশুর হাটটি। দু-দিনেই গরু, মহিষ, ছাগল , ভেড়া কেনা-বেচা হয়।
এ বছর ভূরুঙ্গামারী হাটে ঈদুল আযাহাকে ঘিরে ৬০ লক্ষ টাকার গরু বেচা কেনা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে বিক্রেতাদের হিসাব অন্যরকম। তাদের মতে কোটি টাকার উপরে পশু কেনা-বেচা হবে।
সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় ভারতীয় গরু আসার শঙ্কাও করছে তারা। এটি ঠেকানো না গেলে স্থানীয় খামারিরা বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন।
উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়নের খামারি শাহজামাল বলেন, আজ হাটে ২টি বড় মহিষ এনেছি ৬ লক্ষ টাকা দাম চাচ্ছি। গত হাটে ১টি দামড়া গরু ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খামারে আরও ৭টি গরু আছে। আশা করি ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে।
পাথরডুবি ইউনিয়নের মহির ব্যাপারী বলেন, গরুর দাম মানানসই আছে। হাটে দেশি গরুর চাহিদা বেশি। ৬০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকায় দেশি জাতের গরু পাওয়া যাচ্ছে।
টাঙ্গাইল থেকে গরু কিনতে আসা আব্দুর রহিম ও স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী বাবু বলেন, এই হাটে গরুর দাম ক্রয় সীমার মধ্যে আছে।
তবে এখন বিক্রি তুলনামূলক কম হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার ডাঃ আশিকুজ্জামান জানিয়েছেন, হাটে আমাদের ভ্যাটেনারী মেডিকেল টিম কাজ করছে। বিশেষ করে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত কোন গরু পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া যেন ক্রয় বিক্রয় না হয় সে দিকটা খেয়াল রাখা হচ্ছে এবং সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু আসা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি করছেন।
হাটের ইজারাদার ফরিদুল হক শাহিন শিকদার জানান, হাটে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা বিক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন সেজন্য জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ভূরুঙ্গাামরী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ জানান, আসন্ন ঈদুল আযাহা উপলক্ষ্যে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একমাত্র পশুর হাটে সকল ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক পুলিশি নজরদারি অব্যাহত সহ জাল নোট শনাক্ত করতে পুলিশ ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে আগত সকলকে যে কোন প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেয়ার জন্য অনুরোধ রইল।