ডেস্কঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈশাখী ইসলাম বর্ষা (১৮), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেত্রীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছে। তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে উপজেলার ভাবুকদিয়া এলাকায়, যেখানে বর্ষাকে রাস্তায় ফেলে চুল ধরে টেনে এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় সেকেন গাজী, সোহাগ গাজীসহ গাজীগংয়ের বেশ কয়েকজনের নাম এসেছে। তারা একসময় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা অ্যাডভোকেট জামাল মিয়ার অনুসারী ছিল, তবে বর্তমানে তারা বিএনপির নামে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, বর্ষার ছোট বোনকে উত্যক্ত করার কারণে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর হামলাটি করা হয়। হামলার পরে বর্ষা ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে নগরকান্দা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তবে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের সময় সেকেন গাজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর হামলা চালায়, যার ফলে কনস্টেবল-ড্রাইভার হান্নু শরীফ গুরুতর আহত হন এবং তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভাবুকদিয়া বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দু’পাশে অর্ধশতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে এবং পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
ফরিদপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ বলেন, এই হামলা বর্ষার মতো একজন সাহসী নারী নেত্রীকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টা। যারা এই ঘটনায় জড়িত, তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বর্ষার ওপর হামলা নারীর প্রতি, শিক্ষার্থীদের প্রতি এবং গণতান্ত্রিক চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন, এবং বলেন, “তারা যদি বিচার না পায়, তবে ছাত্রসমাজ আর চুপ করে থাকবে না।”
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।