মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগনে সাবেক সংসদ সদস্য ও নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেছেন, “৫ই আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। দেশের অর্থ লুটপাট করে তারা বিদেশি শক্তির সঙ্গে মিলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই অপশক্তিকে আর মাথা তুলতে দেওয়া যাবে না। বাকস্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না—এই রক্তের মূল্যেই দেশ এগিয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের সকল গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত সিস্টেমকে আবার নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে। সুবিচার শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুসারীদের জন্যই ছিল, সাধারণ মানুষ ছিল বৈষম্যের শিকার।”
প্রকৌশলী তুহিন বলেন, “আমার যদি যোগ্যতা থাকে, আপনার সন্তানের যদি যোগ্যতা থাকে—আপনি হিন্দু, মুসলমান যেই হোন না কেন, চাকরি আপনার প্রাপ্য। আমরা সেই বাংলাদেশ বিশ্বাস করি, যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এটি বিএনপি এবং বাংলাদেশের সংবিধানের মূল মন্ত্র।”
রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় ডোমার হাইস্কুল মিলনায়তনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ ক্ষত্রিয় সমিতি, ডোমার উপজেলা শাখা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তুহিন বলেন, “আপনারা নিজেরা নিজেদের সংখ্যালঘু বলেন, অথচ বিএনপির ৩১ দফার কোথাও ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি নেই। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সব ধর্মের মানুষই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই শহীদ হয়েছেন, আমরা তা ভুলিনি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনাদের জমিদানসহ নানামুখী অবদান রয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জহুরুল আলম, ডোমার উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রেয়াজুল ইসলাম (কালু), সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন, পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ আনিছুর রহমান আনু ও সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তুহিন বলেন। ডোমারে কোনো কাঁচা রাস্তা থাকবে না। ডোমার-ডিমলায় যে সব সমস্যা রয়েছে তার দূর করা হবে। আপনাদের সমস্যাগুলোকে কোনো সমস্যাই মনে করছি না। এ সব সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, নীলফামারী জেলা শাখার আহ্বায়ক বাবু প্রবীর কুমার গুহ (রিন্টু)। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্ষত্রিয় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাবু শ্রী ঠাকুর গোরাচাঁদ অধিকারী এবং সঞ্চালনা করেন উজ্জ্বল কান্তি লাল।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা শেষে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।