Saturday, July 5, 2025
Homeদিনাজপুর৩ চিকিৎসকে ভর করে চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল

৩ চিকিৎসকে ভর করে চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মোঃ মাহফুজুর রহমান সরকার, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল, শয্যা ও চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে। ফলে স্বাস্থ্যসেবার মূল উদ্দেশ্যই ভেস্তে যেতে বসেছে। প্রতিষ্ঠার ৫৮ বছর পর ২০২৩ সালের নভেম্বরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও মিলছে না আধুনিক ও মানসম্মত চিকিৎসা।

গত শনিবার (৫ জুলাই) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব বহন করছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। বহির্বিভাগে দীর্ঘ রোগীর সারি। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ডাক্তার নাই, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সেবা মেলে না।”
সোনারপাড়া গ্রামের মঈন উদ্দিন বলেন, “এখানে জরুরি রোগী নিয়ে আসলে বিপদেই পড়তে হয়। চিকিৎসা পেতে অনেক দেরি হয়।”

জরুরি বিভাগে দেখা গেছে—শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা মেঝেতে পড়ে আছেন। অন্যদিকে প্যাথলজি, এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম বিভাগেও দেখা যায় রোগীর উপচে পড়া ভিড়। অপর্যাপ্ত শয্যা থাকায় অনেকেই নিচতলায় বা মেঝেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলার প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের জন্য মাত্র ৫০ শয্যার হাসপাতালটি কার্যত ৩১ শয্যার সেবা প্রদানেই ব্যস্ত।
অপারেশন থিয়েটার চলছে ভাড়ায় আনা এনেস্থেসিওলজিস্টের মাধ্যমে। প্রধান সহকারী ও স্টোর কিপার না থাকায় স্টোর ও হিসাব শাখা পরিচালিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সহকারীর মাধ্যমে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ জহুরুল আলম জানান, “নবনির্মিত ভবনের কার্যক্রম শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ৫০ শয্যার জন্য অনুমোদিত জনবল পাওয়া যায়নি। তাই আমরা এখনো ৩১ শয্যার কাঠামোয় সেবা দিচ্ছি।”
প্রতিদিন গড়ে ৫০০–৬০০ রোগী বহির্বিভাগে, ৫০–৫৫ জন অন্তর্বিভাগে এবং ২০–৩০ জন রোগী ল্যাবে সেবা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

বর্তমানে এখানে শুধুমাত্র ৩১ শয্যার জন্যই ১২ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। জনবল কাঠামোয় ১২২ পদের বিপরীতে ৭৪ জন কর্মরত, বাকী ৪৮টি পদ শূন্য। এর মধ্যে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, টেকনিশিয়ান, মেকানিক, ড্রাইভার, ওয়ার্ড বয়, আয়া, বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ একাধিক পদে লোকবলের ঘাটতি রয়েছে।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান মেহেদী হাসান বলেন, “জনবল সংকটের বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত পদ পূরণ না হলে স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। আমি আমার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

 

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর