আনোয়ার হোসেন, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার প্রায় ২৬ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালটি। রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসাসেবায় নেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন। ২০২২ সালে নির্মিত ৪০ কোটি টাকার ছয়তলা আধুনিক ভবন এখনো তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে জনবল সংকটে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করে ‘দি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্ট লিমিটেড’। ২০২২ সালের এপ্রিলে ভবনটি হস্তান্তর করা হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তিন বছর পার হলেও শুরু হয়নি চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি, ব্যবহার হচ্ছে না আইসিইউ, ডায়ালাইসিস, অপারেশন থিয়েটার ও আধুনিক কেবিন সুবিধা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মো. রফিকুজ্জামান বলেন, “পরিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য প্রয়োজন ২৩৩ জন জনবল, যার মধ্যে রয়েছে ৫৫ জন চিকিৎসক ও ১০১ জন নার্স। বর্তমানে আছেন মাত্র ৪৩ জন। বারবার আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
সরজমিনে দেখা গেছে, পুরোনো ভবনের ওয়ার্ডে শয্যা সংকট চরম। রোগীরা মেঝে ও বারান্দায় অবস্থান করছেন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন দেড় হাজারের বেশি রোগী। অনেকে অভিযোগ করেন, চিকিৎসকরা নিয়মিত সময় দেন না, আবার প্রাইভেট চেম্বারে যেতে বাধ্য হন রোগীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়নাল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এ হাসপাতালের নাম হওয়া উচিত রেফার্ড হাসপাতাল। চিকিৎসা না দিয়ে শুধু রংপুর পাঠিয়ে দিচ্ছে রোগীদের।”
সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, “জনবল, ফার্নিচার ও অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতির ঘাটতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা চলছে।”
জনগণের করের টাকায় নির্মিত এই আধুনিক ভবনটি কার্যকরভাবে ব্যবহার না হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে ভোগান্তি এবং ব্যর্থ হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।