Home কুড়িগ্রাম অভাবকে জয় করে জিপিএ-৫ : টিউশনি করে স্বপ্ন বাঁচালো কুড়িগ্রামের পাখি

অভাবকে জয় করে জিপিএ-৫ : টিউশনি করে স্বপ্ন বাঁচালো কুড়িগ্রামের পাখি

অভাবকে জয় করে জিপিএ-৫ : টিউশনি করে স্বপ্ন বাঁচালো কুড়িগ্রামের পাখি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
অভাব, প্রতিকূলতা আর সংকটকে সঙ্গী করেই এগিয়ে গেছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর এক কিশোরী। ইয়াসমিন আক্তার পাখি—এক ক্ষুদ্র মুদি দোকানির মেয়ে, যার স্বপ্ন ডাক্তার হয়ে গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বাস্তবতা ছিল কঠিন, কিন্তু স্বপ্ন ছিল অটুট।

পাখির শৈশব থেকেই ছিল সংগ্রামের। পারিবারিক অস্বচ্ছলতা বুঝে সপ্তম শ্রেণি থেকেই সে শুরু করে টিউশনি। নিজের পড়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি সহায়তা করেছে পরিবারের খরচেও। চরম কষ্টের মাঝেও হার না মানা এই কিশোরী সদা সতেজ থেকেছে স্বপ্নের আলোয়।

এবছর ভুরুঙ্গামারীর আন্ধারীঝাড় আলহাজ মাহমুদ আলী বি.এল. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে সে। এই ফলাফল শুধু নম্বরের অর্জন নয়—এটি তার অদম্য মানসিকতার জয়ের প্রতীক।

তার বাবা-মা মেয়ের এই সফলতায় গর্বিত।

গ্রামের মানুষও বলছেন, “এই মেয়েটা একদিন ডাক্তার হবে—এটা শুধু তার স্বপ্ন নয়, এখন আমাদেরও আশা।”

শিক্ষকরাও পাখির অধ্যবসায়, সততা ও দায়বদ্ধতার প্রশংসা করছেন। তারা বলছেন, “পাখি শুধু মেধাবী নয়, দায়িত্বশীল। তার মতো শিক্ষার্থীদের জন্য সমাজের সহায়তা প্রয়োজন।”

তবে এখানেই থেমে নেই পাখির লড়াই। সামনে আরও দীর্ঘ পথ, আরও চ্যালেঞ্জ। উচ্চশিক্ষার জন্য চাই আর্থিক সহায়তা, প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা। শুধু নিজের চেষ্টা দিয়েই সব জয় করা সম্ভব নয়।

পাখির মতো হাজারো মেধাবী শিক্ষার্থী প্রতিদিন স্বপ্ন দেখে, প্রতিদিন সংগ্রাম করে। কিন্তু অনেকেই হারিয়ে যায় শুধু সুযোগ না পাওয়ার কারণে।

ইয়াসমিন আক্তার পাখির গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—স্বপ্ন যদি সৎ হয়, চেষ্টা যদি অবিচল হয়—তবে অভাব, কষ্ট, প্রতিবন্ধকতাও হার মানে।

এই সমাজে প্রয়োজন এমন মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানো, প্রয়োজন পাখিদের জন্য সুযোগ তৈরি করা—যাতে তারা স্বপ্ন নয়, বাস্তবেই ছুঁয়ে ফেলতে পারে আকাশ।

Facebook Comments Box

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here