মোঃ রুকুনুজ্জামান, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুর খামারপাড়া কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেন গত ২৮ মে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন এবং সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দেওয়ায় শিক্ষক ফারুক হোসেনকে শোকজ করা হয়।
পরিদর্শনে শিক্ষা কার্যক্রমে নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতি লক্ষ্য করে শিক্ষক ফারুক হোসেনকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো জবাব না দেওয়ায় জুলাই মাস থেকে তাঁর বেতন স্থগিত রাখা হয়েছে।
বেতন বন্ধের ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক ফারুক হোসেন স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতার বিষয় নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেশমা বেগমের সঙ্গে উত্তপ্ত বাকবিতায় জড়ান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় তিনি উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকলে আশপাশের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এমনকি প্রধান শিক্ষকের কোলে থাকা শিশু কান্নায় ভেঙে পড়ে।
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্বাক্ষর করতে বলা হলেও ফারুক হোসেন জোর করে নিজ খেয়ালে স্বাক্ষর করতে চান। পরে তিনি উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে স্কুল ত্যাগ করেন।
স্থানীয় একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষক ফারুক হোসেনের অতীতেও শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর কারণে অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। একজন শিক্ষকের এমন আচরণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। নিয়ম অনুযায়ী হাজিরা দিতে গেলে স্বাক্ষর নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়।”
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, “শোকজের জবাব না দেওয়ায় তাঁর বেতন স্থগিত রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল ও শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় শিশুদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ আরও চরমভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।