গৌরব কুমার দাস, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
দেবীগঞ্জে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক ইউনিয়ন কমিটিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা এক ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখার অভিযোগে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই বিতর্কিত অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেবীগঞ্জ ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদত্যাগ করেছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়ন যুবদলের নতুন কমিটিতে ( উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান রাজু ও সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সুমনের স্বাক্ষরিত) বিটুল ইসলাম নামে একজনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পরেই অভিযোগ ওঠে, বিটুল ইসলাম অতীতে ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সভাপতি পদে প্রার্থীও ছিলেন।
সাম্প্রতিক ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ পদে বিটুল ইসলামেকে অন্তর্ভুক্ত করায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ পায়। একাধিক সূত্র জানায়, টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের অধিকাংশ নেতাই তার অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং সেই তথ্য কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা নেতাদের জানানোও হয়েছিল।
যুবদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমারা তো এই এলাকায় রাজনীতি করি। আমরা তো জানি কে কী করে। নেতা নিজেই ডিসিশন নিয়েছেন এবং নিজের হাতে কমিটি দিয়েছেন। ওর (বিটুল ইসলাম) নামে অনেক অভিযোগ গেছে। টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ সবাই তার বিষয়ে নেতাকে অবগত করেছেন। নেতা সবই জানেন।
এ নিয়ে মুঠোফোনে কথা হলে বিটুল ইসলাম দাবি করেন, “আমি যুবলীগের রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। পরিস্থিতির কারণে চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলাম মাত্র। তখন আমাকে যুবলীগের কমিটিতে জায়গা দেয়ার কথা হলেও আমি হ্যাঁ না কিছু বলিনি।
অন্যদিকে, কমিটিতে বিতর্কিত একজনকে রাখায় ক্ষোভে পদত্যাগ করেছেন ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন। তিনি জানান, “২০০২ সাল থেকে দলের সঙ্গে আছি। দুঃসময়ে দলের পাশে ছিলাম। কিন্তু আমার মতো ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন না করে টাকা দিয়ে পদ বণ্টন করা হচ্ছে। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।”
তবে এই পদত্যাগ নিয়ে ভিন্ন কথা বলছেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান রাজু। তিনি বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউনিয়ন বিএনপির পরামর্শে তাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি, আওয়ামী লীগের কোন কমিটিতে তার নাম আছে কী না, কিন্তু আমরা তার নাম পাই নি। সে আমাদের বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে ঢাকা, বগুড়া গিয়েছে, আমাদের সেসব ছবিও দেখিয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন লিখিত পদত্যাগপত্র দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করেছেন।”