অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে লাঠি দিয়ে মেরে শাশুড়ির মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন জামাই।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের শাহবাজার পোদ্দারটারী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত শাশুড়িকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
আহত শাশুড়ির নাম মোমেনা বেওয়া (৫৭)। তিনি চন্দ্রখানা বুদারবান্নি গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ মিয়ার স্ত্রী।
অভিযুক্ত জামাইয়ের নাম খাইরুল ইসলাম। তিনি শাহবাজার পোদ্দারটারী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় মোমেনা বেওয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, ১৫ বছর আগে খাইরুল ইসলামের সাথে মোমেনা বেওয়ার মেয়ে শাহীদা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শাহিদা খাতুনকে প্রায়ই নির্যাতন করত খায়রুল। কারণে শাহীদা গার্মেন্টসে চাকরি করতে চলে যায়। কয়েকদিন আগে শাহীদা তার মায়ের বাড়িতে আসে। খবর পেয়ে গত শনিবার খাইরুল শাশুড়ির বাড়িতে গিয়ে শাশুড়ি ও স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে ঘরের তালা ভেঙ্গে কাপড়চোপড় চাল ও পাঁচ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
বাড়িতে ফিরে মোমেনা দরজার তালা ভাঙ্গা দেখে আশপাশ জিজ্ঞাসা করলে প্রতিবেশীরা খাইরুলকে বাড়ির আশপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখার কথা জানায়। তখন মেয়ে শাহীদাকে নিয়ে জিনিসপত্র ও টাকা ফেরত আনার জন্য খাইরুলের বাড়িতে যান মোমোনা বেওয়া। নিজের বাড়িতে শাশুড়ি ও স্ত্রীকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধর শুরু করে। মা মোমেনা বেওয়া প্রতিবাদ জানালে খাইরুল বাশের লাঠি দিয়ে শাশুড়ি মোমেনা বেওয়ার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে মাথা ফেটে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোমেনা বেওয়া।
শাহিদা খাতুন জানান, বিয়ের পর থেকে খাইরুল যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করতো। আজ আমার মায়ের ঘর থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকাসহ সমস্ত জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। আমি আমার মা জিনিসপত্র আনার জন্য গেলে মাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। মায়ের মাথায় পাঁচটি সেলাই। ডান হাত ও কোমড়েও প্রচণ্ড আঘাত করেছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
গুরুতর আহত মোমেনা বেওয়া জানান, খাইরুল এতদিন আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। আজ আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি এই অমানুষের সঠিক বিচার চাই।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।