এনামুল মবিন(সবুজ), চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
চলতি মৌসুমে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাতাশূন্য গাছে ধবল ফুল ইতোমধ্যে পরিণত হয়েছে সজিনায়। গাছে গাছে ঝুলে থাকা সবুজ লাঠি প্রকৃতিতেও ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর ও আশঁ জাতীয় সবজি সজিনার ভারে হেলে পড়েছে সজিনার ডাল পালা । প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন উপজেলার কৃষকরা। মুখে হাসি ফুটে উঠেছে সকল সজিনা কৃষকদের মুখে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার সজিনার বাম্পার ফলন ও লাভের আশা করছেন এলাকার কৃষক ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।
সরজমিনে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্যে প্রায় কম বেশি সব বাড়ী গুলোতে তিন-চারটি করে সজিনা গাছসহ জমির ধারে,রাস্তার পাশেও সজিনা গাছ লাগানো হয়েছে। এবছরে সজিনার লক্ষ্যমাত্রা অনেক টা পেরিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় উপজেলায় সজিনা চাষ দিন দিন অনেকটায় বেড়েই যাচ্ছে। এখান কার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে।
উপজেলার ফতেজংপুর ইউপি এলাকার সজিনা চাষি মোঃ সামাদুল হক বলেন, বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে ২টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে মোটামুটি অনেক টাকার সজিনা বিক্রি করেছি । আশা করছি এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি সজিনার মূল্য ৭০ হতে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উচ্চমূল্য পাওয়ায় খুশি চাষিরা। দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে সজিনা চাষে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে এই এলাকার অন্যান্য চাষিরাও। মৌসুম শেষে প্রতিবারের মতো এবারও ডাল রোপণ করা হবে।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা জানান, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতীয় সবজি।সজিনা কে বলা হয় ” মিরাকল ট্রি”। এর পাতা, ফুল, ফল সবই খাওয়া যায়। সজিনায় প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো বলেন, এটি বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। তাছাড়া ঠান্ডা-গরম,খরা সহিষ্ণু হলেও এ গাছ বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্ম নেয়। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি বছরে সজিনার ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া সজিনা গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও নেই । আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান থাকলে সজিনার বাম্পার ফলনও আশা করা যায়। বাজারে পুষ্টিগুণ ও চাহিদার কারণে প্রতি বছর এর আবাদ বাড়ছে।