ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেছেন, সংস্কারের কথা প্রথম বলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। রাষ্ট্র মেরামতের যে কথাগুলো সেগুলো ২০১৪ সালে বেগম জিয়া বলেছেন। ২০১৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল।
আজকে যারা সংস্কারের কথা বলছেন বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে নাই এরকম সংস্কার আপনারা কেউ করতে পারেননি। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্র সংস্কার আটকে থাকবেনা । আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বিএনপির অগ্রযাত্রাকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে একটা ফ্যাসিস্ট দল বার বার পিছিয়ে দিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ ফ্যাসিস্টদের আর কোন জায়গা দেবেনা। এটাই আমাদের প্রত্যয়।
দীর্ঘ দেড় যুগ পর পঞ্চগড় সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষ্যে শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়াম চত্বরের মুক্তমঞ্চে প্রথম অধিবেশনের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমরা নির্বাচনের কথা বললেই আমাদের দোষ দেয়। অথচ একটি চূড়ান্ত বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি নির্বাচন ঘোষণা করেন যাতে সাধারণ মানুষ তাদের মতামত জানাতে পারে। বিএনপি শুরু থেকেই নির্বাচনমুখী দল। গণতন্ত্রের দল। ১৯৭৫ সালে অভ্যুত্থান না হলে ১ থেকে দেড় বছরের মধ্যেই দেশের জনগণ মাঠে নেমে তৎকালীন সরকারকে দেশ ছাড়া করতো। ২০২৪ সালে একই ঘটনা ঘটেছে। সারা পৃথিবীতে সকল বিপ্লবকে সাধারণ জনতা সাফল্যমণ্ডিত করেছে। ২০২৪ এর বিপ্লবও কারও একার নয়। আমরা ২০২৪ শের বিপ্লবে শহীদ এবং আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দু:সাহসিক যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। তারপরেই বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অথিক্রম করে। তারপরেই ১৯৭৫ সাল একটি ঐতিহাসিক সাল। কারণ ৭ নভেম্বরে সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে বন্দি অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়। এবং সেই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পরিবর্তনের ফলে এই যে স্বৈরাচার ভিত্তিক একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিলো সেটার পরিবর্তে ১৯৭৯ সালে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মানুষ আরেকটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে যাত্রা শুরু করি। ৫ আগষ্টের আগে আমাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারতোনা। খেতে ঘুমাতো হতো । কিন্তু ৫ আগস্টের পর এমন কি হলো যে ১৭’শ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করতে হলো। রাতে অন্য বাড়িতে থাকতে হতো। আত্মীয় স্বজনরাও জায়গা দিতোনা। ২০০৮ সাল থেকে ফ্যাসিস্ট প্রতিহত করে আসছে যে দল সেই দলের কর্মীদের এমন অবস্থা হলো কেন। কাজেই আমাদেরকে সংযত হতে হবে। আমাদের আচরণ হতে এমন যাতে আমাদেরকে দেখে মানুষ শিক্ষা নিতে পারে। বিভিন্ন প্রপাগান্ডা আছে এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের আচরণকে সংযত রাখতে হবে। তারেক জিয়াকে কেন বাংলাদেশের বাইরে পাঠানো কেন এতো উদ্যোগ ছিল। কারণ তিনি বাংলাদেশের স্বার্থের বাইরে কিছু হতে দেবেন না । এসময় তিনি তারেক রহমানের রাজনীতি বিষয়ে প্রকাশিত বই তারেক রহমান পলিসিস এন্ড পলিটিক্স : কনটেম্পোরারি বাংলাদেশ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন বাংলাদেশে গাড়ির কারখানা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। এবং বাংলাদেশের গ্যাস তাদেরকে দিতে হবে। তারেক জিয়া এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে আমরা ফেসবুক বাংলাদেশ দেখেছি। আজ আপনারা সংস্কারের কথা বলছেন তারেক জিয়া ২০২৩ সাল থেকে সংস্কারের কথা বলছেন। সংস্কারের কথা প্রথম বলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। রাষ্ট্র মেরামতের যে কথাগুলো সেগুলো ২০১৪ সালে বেগম জিয়া বলেছেন। ২০১৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। আজকে যারা সংস্কারের কথা বলছেন বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে নাই এরকম সংস্কার আপনারা কেউ করতে পারেননি। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্র সংস্কার আটকে থাকবেনা। আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বিএনপির অগ্রযাত্রাকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে একটা ফ্যাসিস্ট দল বার বার পিছিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ফ্যাসিস্টদের আর কোন জায়গা দেবেনা। এটাই আমাদের প্রত্যয়। দীর্ঘ দেড় যুগ পর সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রথম অধিবেশনের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় কেন্দ্রীয় কিমিটির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাড. রিনা পারভীন, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু সহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।