নুরুল আমিন, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা মধুমাস জ্যৈষ্ঠ মাসের অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে ধান পেকেঁ পানিতে তলিয়ে যাওয়া, ধান কাটা, মাড়াই, চাহিদা মতো কামলা/শ্রমিক/লেবার না পাওয়া, ভেজা ধান শুকাতে না পারায় চরম হতাশা ও ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষকরা।
চলতি বোরো মৌসুমে ভরা মৌসুমে ধান কাটা, মাড়াই ও ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন কৃষক ও কৃষাণীরা। আষাঢ়- শ্রাবণ বর্ষাকাল হলেও এবার জ্যৈষ্ঠ মাসে আগাম বৃষ্টির কারণে ধানক্ষেতে বৃষ্টির পানি,ধান অতিরিক্ত পেকেঁ হেলে পড়া সহ বাড়ির আঙ্গিনা/ বাহির বাড়িতে বৃষ্টির ফলে কাঁদা সৃষ্টি
হওয়ায় ধান কেটে ওঠানো, ডাঙ্গানো/মাড়াইকড়া ও ভেজা ধান শুকাতে না পারায় চরম উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় পড়েছেন কৃষকরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ ধান কাঁটা হয়ে গেলেও কোথাও কোমর পানি কোথাও হাঁটু পানিতে ডুবে আছে অনেক ধান। জোঁকের উপদ্রব, শ্রমিক সংকট থাকায় চড়া মুল্যেও মিলছে না শ্রমিক।
কিছু কিছু কৃষক পানিতে দাঁড়িয়ে নিজের ধান কাঁটার চেষ্টা করছেন। এদিকে কেটে রাখা ভেজা ধানে নতুন করে চাড়া গজিয়ে নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে অনেক কৃষকের । জ্যৈষ্ঠ মাসে টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় বোরো ধান কাঁটা ও শুকাতে না পাড়ায় গভীর চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।
দিনে থেমে থেমে সামান্য রোদ কিছুক্ষণ পরেই আবার বৃষ্টি দেখা মিললেও তাতে যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছেন ভেজা ধান শুকানোর চেষ্টা করছেন।
জয়মনিরহাট ইউনিয়নের কৃষক আমিন মিয়া, রফিকুল ইসলাম, আলাউদ্দিন বলেন অসময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে আমাদের কষ্টের শেষ নেই। শ্রমিক সংকটের কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ধান কাটা, ধান মাড়াই করা এবং রোদ না থাকায় কঠিন সমস্যায় পড়ে আছি। আন্ধাঝাড় ইউনিয়নের মাঝিটারী গ্রামের কৃষক আফসার, রমজান, শ্রী মোহন্ত দাস বলেন, আমাদের এখানে ব্রি ধান ২৯ পর্যাপ্ত আবাদ হয়েছে। ধান পেকেঁও গেছে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান কাটতে সাহস পাচ্ছি না।এই এলাকাটি নদী বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এমনিতেই কৃষকদের অনেক কষ্ট করে ফসল ফলাতে হয়। তাতে খারাপ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলাই গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, তিনবিঘা জমির ধান কেটেছি। শুকাতে পারছিনা। ধান যেখানে রেখেছি সেখানেই আরার চারা গজিয়েছে। একবিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
পাথরডুবি ইউনিয়নের দলবাড়ি বিলের কৃষক তোফাজ্জল হোসেন ও নায়েব আলী বলেন, ফলন ভালো হলেও বৃষ্টির কারণে নীচু জমির ধান তলিয়ে গেছে। কষ্টের ফসল ঠিকঠাক ঘরে তুলতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল জব্বার জানিয়েছেন, এবার উপজেলায় বোরো মৌসুমে ১৬ হাজার ৪শত ৮৫ হেক্টর ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে। উপসহকারী কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে আমন মৌসুমে বীজ ও সারের প্রণোদনা আওতায় আনা হবে।