Thursday, May 1, 2025
Homeঠাকুরগাঁওআমরা নিজেদের স্বার্থে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন তৈরি করছি- ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল

আমরা নিজেদের স্বার্থে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন তৈরি করছি- ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সোহেল তানভীর, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধদের ভাগ করেছি। এই ভাগ করাটাই হচ্ছে ভয়ানক। অথচ দেখেন যুগের পর যুগ আমরা একসাথে বাস করে আসছি। কেউ বিপদে পড়লে আমরা একে অপরের সাথে মিশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪ নং বড়গাঁও ইউনিয়নের লক্ষীর হাটে হিন্দু সম্প্রদায়দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নিজেদের একটা বিচার বিবেচনা আছে। জনগণের কাছে যাকে ভালো লাগবে সে তাকে ভোট দিবে। কিন্তু ভোট দেওয়ার জায়টাটি তো তারা রাখেনি। গত ১৫ বছর ধরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। এই দেশটা আমাদের। আমরা ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা নয় বরং পরিবারের তাগিদে আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। মরলে এই দেশেই মরতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখানেই বড় হবে, এখানেই লেখাপড়া শিখবে। এখানে কেন আমরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করবো! নিজেদের মধ্যে যেদিন আমরা লড়াই বন্ধ করতে পারবো সেদিন আমরা সঠিক স্থান খুঁজে পাব। তা না হলে এই ঝগড়া চলতেই থাকবে। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের কোন উন্নতি ঘটবে না।

শেষ হাসিনাকে নিয়ে তিনি বলেন, আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি হাসিনা দেশ থেকে পালাবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা বিচার থাকে। তিনি বিচার করেছেন, এতো পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী থাকা সত্ত্বেও কেউ তার পাশে দাঁড়ালো না। তাকে দৌড়ায় লুকিয়ে এই দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। কেন? কারণ তিনি এমন কাজ করেছেন যে, এই দেশে থাকার মতো কোন পথ ছিল না। চারদিক থেকে মানুষ আর মানুষ। তাদের একটাই লক্ষ ছিল গণভবন আর ওই শেষ হাসিনা।

হিন্দু মুসলমানদের বিভেদ নিয়ে ফখরুল বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত হওয়ার আগে কেউ চিন্তা করেনি হিন্দু মুসলমান ভাগ হবে বা আলাদা দেশ হবে। যারা উপর মহলে বসে আছে তারা এই বিভেদ তৈরি করছে। তারা চিন্তা করে কীভাবে বিভেদ তৈরি করা যায়। এজন্য তারা হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে গোলযোগ লাগিয়ে তাদের ফায়দা হাছিল করে।

মিথ্যা মামলা নিয়ে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের জর্জরিত করেছিল। যেভাবে আমাদের ভাইদের বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেল হাজত খাটিয়েছিল। আমরা চাইনা আর এ ধরনের মিথ্যা মামলা হোক। আমরা ন্যায্য ও সুবিচার চাই। আমরা মাথার উপর একটা ভালো ছায়া বা আশ্রয় চাই। আমরা কৃষকেরা ভালো সেচ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ফসলের ন্যায্যমূল্য চাই। এই ব্যবস্থাটা আমরা করবো।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাচ্ছি যেন একটা অবাধ নির্বাচন হয় যে নির্বাচনে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করতে পারি। এই সরকার হবে জনগণের সরকার। আমরা আমাদের সুখ দুঃখের কথা যেন সেই সরকারকে বলতে পারি এবং তারা আমাদের সাহায্য করবে।

পরিশেষে হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টানসহ সকলের কাছে অনুরোধ রেখে মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা নিজেদের মধ্যে কোন বিভাজন সৃষ্টি না করি। আমরা সবাই এক হই, একটা লক্ষ্যে যে আমরা দেশটাকে গড়ে তুলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবো, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো। আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব। কিন্তু গত ১৫ বছরে যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে আমার ভোট আমি দিব তোমার ভোটও আমি দিব। এটা যেন না হয়।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফায়সালা আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

 

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর