অনিল চন্দ্র রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে টাকার বিনিময়ে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক পকেট কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুর আড়াইটায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে হাজি মার্কেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মসজিদুল হুদা মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির পদত্যাগকারী যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু, পৌর বিএনপির পদত্যাগকারী যুগ্ম আহ্বায়ক মতলেবুর রহমান মন্জু, পদত্যাগকারী সদস্য আমিনুল ইসলাম, সদ্য ঘোষিত পৌর বিএনপির পদত্যাগকারী ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে চ্ছাবা স্টার, কুড়িগ্রাম জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর সোহেল রানা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, নাজমুল হুদা, মঈন আহমেদ, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পারভেজ সরদার, সাবেক ছাত্রনেতা স্বপন কুমার সাহা, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান রাজু, সদস্য সচিব ফাজকুরুনী আহমেদ,ও রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক জিএস ফিরোজ কবির কাজল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,কমিটিতে ত্যাগী, কারানির্যাতিত ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি কায়েম করে কমিটি করা হয়েছে। আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে টাকার বিনিময়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। এটা পকেট কমিটি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে যে নেতাকর্মীরা কারাভোগসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি দ্রুত বাতিল করতে হবে।
এর আগে গত ১৬ মে উলিপুর পৌরশহরের হাজী সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় এক সংবাদ সম্মেলনে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিবাদী ও আওয়ামী সমর্থিত ও আওয়ামীলীগের দোসর জাতীয় পার্টি’র কর্মীদেরকে নিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির ৪ জন পদত্যাগ করেন। তারা হলেন- উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে চ্ছাবা স্টার, যুগ্ম আহ্বায়ক মতলেবুর রহমান মঞ্জু ও সদস্য আমিনুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সদ্য ঘোষিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তারিক আবু আলা চৌধুরি বলেন, তাদের এসব অভিযোগ সঠিক নয়। বিগত দিনে আমি পৌর বিএনপির সভাপতি, পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদে ছিলাম। উলিপুরের মানুষ জানে দীর্ঘদিন ধরে কারা বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। জেলা কমিটি ত্যাগীদের মূল্যায়ন করেছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ জানান, বিগত দিনে বিএনপির পদে থেকে অত্যাচারিত হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা নেতৃত্বে দিয়েছেন বর্তমানে তাদেরকেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারেনি তারাই বির্তক সৃষ্টি করছে। এছাড়া যাকে জাতীয় পার্টির নেতা বলা হয়েছে উনি বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, যারা যোগ্য তাদেরকেই নেতৃত্বে আনা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে কমিটি দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ। যারা বলেছে তাদেরকেই বিষয়টি প্রমাণ করতে হবে। উলিপুরে বিবাদমান দুইটি গ্রুপ রয়েছে। মান অভিমান থাকবেই।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও সদস্য সচিব আলহাজ্ব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উলিপুর উপজেলা বিএনপির ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ও পৌর বিএনপির ২৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।