মোজো ডেস্কঃ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গোপালগঞ্জে এখনও কারফিউ চলছে। গত ১২ ঘণ্টায় জেলাব্যাপী যৌথ বাহিনীর অভিযানে আরও ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত জেলাব্যাপী অভিযান চালিয়ে আরও ২০ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরে তাদের গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর দ্বিতীয় দফার কারফিউ চলছে গোপালগঞ্জ জেলা জুড়ে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১১টা পর্যন্ত ফের কারফিউ জারি করা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টার জন্য কারফিউ বন্ধ থাকবে। এরপর দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ যায় এনসিপি। তবে এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরে ওইদিন সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। কাছাকাছি সময়ে হামলা করা হয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি বহরেও। এ দুই ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে জানায় গোপালগঞ্জ পুলিশ।
দুপুরে এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা। তারা মঞ্চে থাকা সাউন্ড বক্স, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং উপস্থিত এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এনসিপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে সরে যান।
আধঘণ্টা পর ওই সমাবেশ স্থলেই পুলিশি নিরপত্তায় সমাবেশ করে এনসিপি। সেখানে নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপির নেতাদের গাড়ি বহরে আবারও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও বাড়তি জনবল নিয়োজিত করা হয়।
প্রথমে এনসিপির নেতাকর্মীরা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে সেনাবাহিনীর এপিসিতে করে খুলনায় নেয়া হয় তাদের।