এনামুল মবিন সবুজ, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার ঘন্টাঘর বাজারে অবস্থিত স্বাধীনতার পূর্বে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী পোস্ট অফিসটি আজ চরম অবহেলায় ধ্বংসের পথে। মাটির তৈরি পুরোনো ভবনটি বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দেয়াল ভেঙে পড়ছে, দরজায় ঘুন ধরেছে, জানালা চুরি হয়ে গেছে। বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা এই ভবন এখন স্থানীয়দের জন্য এক প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে।
একসময় সাতনালা, নশরতপুর ও সাঁইতাড়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাবাসীর যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল এই পোস্ট অফিস। সেই পোস্ট অফিস আজ পড়ে আছে অযত্নে। অফিসের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র পর্যন্ত পোস্টমাস্টার তার নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। অফিসটিতে বসার মতো কোনো অনুকূল পরিবেশও নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিসুল হক শাহ (৫৮) বলেন, “আমরা জন্মলগ্ন থেকেই এই পোস্ট অফিস দেখে আসছি। কিন্তু কখনও কোনো সংস্কার কার্যক্রম দেখিনি। বড় ধরনের দুর্যোগ হলে এটি ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।”
এক প্রবীণ এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, “অনেক সময় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আসা টাকা পোস্টমাস্টার গ্রাহকদের না জানিয়ে গোপন করে রাখতেন। পরে জানাজানি হলে দফায় দফায় টাকাগুলো দিতেন। এখনও তার ওই স্বভাব রয়েছে।”
বিন্যাকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মসলেম উদ্দিন বলেন, “একসময় চিঠিপত্র আদান-প্রদানে পোস্ট অফিসের বিকল্প ছিল না। এখনও কিছু সরকারি চিঠি আসে। কিন্তু ঘরটির অবস্থা এতটাই করুণ যে দ্রুত সংস্কার না হলে এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে।”
এ বিষয়ে ওই শাখা অফিসের পোস্টমাস্টার শাহজাহান আলী জানান, “পুনঃনির্মাণের বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু অফিসটির নিজস্ব জমি না থাকায় সরকারিভাবে কোনো ভবন নির্মাণ হয়নি। তাছাড়া বর্তমানে সরকারি কিছু চিঠি ছাড়া অন্য চিঠিপত্র তেমন আসে না, তাই ভবন নির্মাণের গুরুত্বও দেওয়া হচ্ছে না।”
গ্রাহকের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “বর্তমানে কেউ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে টাকা পাঠান না।”