Monday, June 30, 2025
Homeপঞ্চগড়পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পাশে ময়লার ভাগাড় : বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি,...

পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পাশে ময়লার ভাগাড় : বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, নীরব পরিবেশ অধিদপ্তর

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় শহরের জালাসী-টুনিরহাট সড়কের পাশে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ময়লার বিশাল ভাগাড় থেকে নির্গত দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা। নিয়মিত চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।

পৌরসভার সব বর্জ্য দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় ফেলা হচ্ছে। পচা খাবার, হোটেল-রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্ট, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, এমনকি মৃত পশুর দেহ পর্যন্ত সেখানে ফেলা হচ্ছে। রয়েছে হাসপাতালের মেডিকেল বর্জ্যও। সবমিলিয়ে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে এই ভাগাড়।

পাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিদিন এই দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয়। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গৌতম চন্দ্র রায় বলেন, “স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় নাক-মুখ চেপে রাখতে হয়। অনেক সময় বমি চলে আসে।”

একই অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষার্থী মেঘলা বলেন, “আমরা চাই, ভাগাড়টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হোক।”

বৃষ্টি হলে ভাগাড়ের ময়লা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে—এমন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় ভ্যানচালক ও পথচারীরাও। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, মাঝে মাঝে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়, যার ধোঁয়া আরও বেশি ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী সামিম হোসেন বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে এভাবে বর্জ্য ফেলা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এর ফলে জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়বে।”

পঞ্চগড় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইউসুফ আলী জানান, পৌরসভার জন্য নির্ধারিত স্যানেটারি ল্যান্ডফিল্ড ও পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু পৌরসভা তা ব্যবহার না করে এখনও সড়কের পাশে বর্জ্য ফেলে আসছে।

তিনি বলেন, “আমরা সর্বশেষ ২০২২ সালের শেষ দিকে ভাগাড়টি পরিদর্শন করেছি। এরপর আর কোনো পরিদর্শন হয়নি।”

পঞ্চগড় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব রহমান সুমন বলেন, “এভাবে খোলা জায়গায় বর্জ্য রাখায় শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা, ফুসফুসের সংক্রমণ ও অ্যালার্জির মতো রোগ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।”

প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক স্যানেটারি ল্যান্ডফিল্ড ও বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের প্রকল্প শুরু হয়। প্রকল্পটি দুই বছর আগে শেষ হলেও এখনও তা চালু করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে জৈব সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি।

পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সীমা শারমিন জানান, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জনসচেতনতামূলক প্রচার, ডাস্টবিন স্থাপন এবং দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহারের কাজ চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে।

 

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর