ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
সোমবার (২ জুন) রাতে পঞ্চগড় জেলায় এক আকস্মিক ঝড়ে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। রাত ১০টা ১৫ মিনিট থেকে ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মাত্র ২৫ মিনিটের এই ঝড়ে উপড়ে গেছে শত-শত গাছপালা, উড়ে গেছে টিনের চাল, ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি ও সীমানা প্রাচীর। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বহু এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড়ের ফলে ইন্টারনেট পরিষেবাও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
ঝড়টি বিশেষ করে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লা—মসজিদ পাড়া, পুরাতন ক্যাম্প, রামের ডাংগা, রাজনগর, কায়েতপাড়া, তুলারডাংগা, নিমনগর, ইসলামবাগ, জালাসীপাড়া—এবং সদর উপজেলার ধাক্কামারা, মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
উপড়ে পড়া গাছের কারণে অনেক বাড়িঘরে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টিনের চাল উড়ে গিয়ে খোলা পড়ে যায় অসংখ্য ঘর। ধাক্কামারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, ফলে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণে ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।
নিমনগড় এলাকার রশিদ আলী বলেন, “আমার জীবনে এমন ঝড় দেখিনি। সাতটি গাছ আমার বাড়ির উপর ভেঙে পড়েছে। এলাকায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একাধিক গাছ পড়েছে।”
রামের ডাংগার তরিকুল ইসলাম বলেন, “আমার সেমিপাকা ঘরের একটি দেয়াল গাছ পড়ে ভেঙে গেছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এমন ঝড় কখনো দেখিনি।”
বুড়িরবান এলাকার প্রসন্ন কুমার রায় বলেন, “১৫-২০ মিনিটেই সব শেষ। দুইশ বছরের পুরোনো বটগাছ পড়ে গেছে। এখনো বিদ্যুৎ ফেরেনি।”
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ইকবাল হোসাইন বলেন, “এটি স্মরণকালের ভয়াবহ ঝড়। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।”
সোমবার রাত থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ এলাকা। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কেবল কিছু এলাকায় আংশিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়েছে। রাস্তায় গাছ ও খুঁটি পড়ে থাকায় যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।