ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় শহরের রওশনাবাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে অনলাইন জুয়ার এক সক্রিয় ডিলারকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) গভীর রাতে পরিচালিত এ অভিযানে চাঞ্চল্যকরভাবে টয়লেটের ফ্ল্যাশবক্স থেকে উদ্ধার করা হয় অনলাইন জুয়ার কাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল ফোন।
আটককৃত ব্যক্তির নাম আবু সাত্তার (২৫)। তিনি সদর উপজেলার শিংরোড ভুজারিপাড়া এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে। দীর্ঘ চার বছর ধরে শহরের রওশনাবাগ এলাকায় একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে গোপনে অনলাইন জুয়ার নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছিলেন তিনি।
সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আবু সাত্তারের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দরজায় বারবার কড়া নাড়ার পরও সাড়া না পাওয়ায় সেনা সদস্যরা ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ঘরের বিভিন্ন অংশ তল্লাশির সময় টয়লেটের ফ্ল্যাশবক্সে লুকিয়ে রাখা মোবাইলগুলো উদ্ধার করা হয়। অভিযানে আরও উদ্ধার করা হয় একটি ল্যাপটপ ও একটি কম্পিউটার। ডিভাইসগুলোতে থাকা তথ্য বিশ্লেষণ করে অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত অসংখ্য ওয়েবসাইটের লিংক, লেনদেনের হিসাব ও একাধিক একাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর দাবি, ডিভাইসগুলোতে প্রায় ১২ লাখ টাকার আর্থিক লেনদেনের তথ্য মিলেছে।
রাত ২টা পর্যন্ত চলা অভিযানে নেতৃত্ব দেন পঞ্চগড় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেহেদী পিয়াস জয়। অভিযানে জব্দকৃত ডিভাইস ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আটক আবু সাত্তারকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তাকে পুলিশ হেফাজতে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আটকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবু সাত্তার বলেন, “আমি ৪ বছর ধরে এই কাজ করছি। টেকনিক্যালি এটা অবৈধ হলেও দেশের টাকা দেশেই রাখার জন্য করেছি। মাসে প্রায় এক লাখ টাকা আয় হতো।”
সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেহেদী পিয়াস জয় বলেন, “আবু সাত্তার একজন সংগঠিত অনলাইন জুয়ার হোতা। তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনলাইন জুয়া ও সাইবার অপরাধ দমনে সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে।”