ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ে স্ত্রী হত্যার মামলায় সফিকুল ইসলাম (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। সোমবার (২ জুন) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ কামরুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী তরঙ্গীপাড়া এলাকার হামেদ আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে একই এলাকার আব্দুল মান্নানের মেয়ে মমতাজ বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু সফিকুল প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও মমতাজের ওপর নির্যাতন চলতেই থাকে। স্বামী সফিকুল প্রায়ই তাকে মারধর করতেন, এবং এতে তার পরিবারের লোকজনও সহায়তা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৫ সালের ৮ জুলাই রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। ওই রাতে মমতাজকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরদিন ৯ জুলাই ভোরে নিজ ঘরে মমতাজের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং একটি অপমৃত্যু মামলা করে বোদা থানায়।
পরবর্তীতে ১৪ জুলাই নিহত মমতাজের বাবা আব্দুল মান্নান ১১ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর বিচার প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার এ রায় দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ইয়াসিনুল হক দুলাল বলেন, “ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভিকটিমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আদালতে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই ১ নম্বর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ লিটন বলেন, “আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।”