নুরুল আমিন, ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার থানাঘাট-সাহেবগঞ্জ সীমান্ত সড়ক এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সড়কের দুই পাশজুড়ে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এক অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছে সজ্জিত এই সড়ক প্রকৃতির ছোঁয়ায় যেন নতুন প্রাণ পেয়েছে।
‘আমার গ্রাম আমার শহর’ পাইলট গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি ভিত্তিক এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা এলজিইডি। তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের স্লোপ ও সোল্ডারে লাগানো হয়েছে চালতা, কাঠবাদাম, নিম, জলপাইসহ বিভিন্ন গাছ। পাশাপাশি শিম, লাউ, ঝিঙে, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স ও শসাসহ নানা সবজি চাষ করে ব্যবহৃত হয়েছে কৃষিভিত্তিক পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি।
এই প্রকল্প শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিই নয়, বরং পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং অতিরিক্ত আয় সৃষ্টিতেও সহায়ক হচ্ছে। উৎপাদিত ফল ও সবজি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অনেকে।
সড়ক ঘুরে দেখা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত এলসিএস কর্মীরা নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করছেন। সকাল থেকেই মাঠে থাকা শ্রীমতি মঞ্জুরি রানী জানান, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের কাজের সুযোগ হয়েছে, গাছের পরিচর্যার পাশাপাশি আমরা সড়কের দেখভালও করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান রিন্টু বলেন, “এখানে পেঁপে, বেগুনসহ নানা ফল-সবজি আমরা পেয়েছি। প্রকল্পটি আমাদের জীবনে আশীর্বাদস্বরূপ।”
পাথরডুবি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম মাস্টার বলেন, “এই অবহেলিত এলাকায় প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে একটি আদর্শ ও নান্দনিক সড়ক।”
উপজেলা প্রকৌশলী ইনছাফুল হক সরকার জানান, “প্রকল্পের আওতায় তিন কিলোমিটার সড়কে তিন ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে। এলাকাবাসী, স্থানীয় প্রশাসন ও প্রকল্প পরিচালকের তত্ত্বাবধানে এ প্রকল্প শতভাগ সফল হয়েছে।”
এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এখন হয়ে উঠেছে ভুরুঙ্গামারীর এক উজ্জ্বল উদাহরণ।