নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রংপুরের মিঠাপুকুরে জিআই পণ্য হিসেবে হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ উৎসবের উদ্বোধন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন ২০২৫) মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ উৎসব ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।
তিনি বলেন, “পদগঞ্জ থেকে রানীপুকুর পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। কৃষিপণ্য বিশেষ করে আম সংরক্ষণের সুবিধার্থে পদগঞ্জ এলাকায় একটি হিমাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
উৎসব উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল খোড়াগাছ ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের আমচাষি আইয়ুব আলীর বাগানে হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আমের স্টল পরিদর্শন করেন এবং চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (উত্তর ডি) মুলাতামিস বিল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাওলানা এনামুল হক, রংপুর জেলা আহ্বায়ক সদস্য ও সহকারী অধ্যাপক সাজেদুর রহমান রানা, খোড়াগাছ ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি আইয়ুব আলী এবং সাধারণ সম্পাদক জহেরুল ইসলাম।
কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন জানান, “মিঠাপুকুর উপজেলায় ১,৩০০ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ হয়েছে। এ বছর সম্ভাব্য উৎপাদন ২৬,০০০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।”
রংপুর কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “হাড়িভাঙ্গা আম কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলের কৃষিতে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। এর বাজার এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও সম্প্রসারিত হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী। তিনি জানান, “এই ইউনিয়নের ১৬টি এলাকায় প্রায় ৪৩ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ হচ্ছে, যা এলাকার অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে।”
মাওলানা এনামুল হক বলেন, “হাড়িভাঙ্গা আমকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে রংপুর অঞ্চলের সম্মান যেমন বেড়েছে, তেমনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।”
চাষিরা আশা করছেন, সরকারি সহায়তা ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে হাড়িভাঙ্গা আম শিগগিরই আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান তৈরি করবে।