আজঃ সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ -এ ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ - ১৮ শা’বান ১৪৪৬
  • আজ রংপুরের আবহাওয়া

সৌদিতে নির্যাতিত লিপি অবশেষে দেশে ফিরলেন : প্রশংসায় ভাসছেন কুড়িগ্রামের ডিসি

Nuclear Fusion Closer to Becoming a Reality6

মোঃ বুলবুল ইসলাম

মোঃ বুলবুল ইসলাম , কুড়িগ্রাম সদর , কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

আপডেটঃ 17 আগস্ট, 2025

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের বাউরা গ্রামের সাহের বানু লিপি নামের এক নারী সৌদি আরবের রিয়াদে গৃহকর্মীর কাজে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার মানবিক উদ্যোগ ও একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন। গত ১৫ আগস্ট লিপি নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। তাঁর ফেরার খবরে পুরো গ্রামে স্বস্তি ও আনন্দের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।

পরিবার সূত্র জানায়, লিপি একজন শিশু কন্যার জননী। অভাবের কারণে প্রায় আট থেকে নয় মাস আগে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে পুলিশের চাকরিতে থাকা আহমেদ নামের এক ব্যক্তির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নিতে যান। সেখানে তিনি প্রতিনিয়ত নির্যাতন, মানসিক নিপীড়ন ও হত্যার হুমকির মধ্য দিয়ে দিন কাটাতেন। একপর্যায়ে তিনি মোবাইলের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে নির্যাতনের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে তার মা কোহিনুর বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েন।

এ পর্যায়ে লিপির ছোট বোন কলেজছাত্রী মারুফা রুমী ২০২৫ সালের ১৯ মে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি আবেগময় বার্তা পাঠিয়ে বড় বোনকে উদ্ধারের আকুতি জানান। জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠান। পাশাপাশি তিনি কুড়িগ্রামের পরিচিত ও যোগাযোগ সম্পন্ন ব্যক্তি কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি লুৎফর রহমানের সহযোগিতা নেন।

পরে লুৎফর রহমান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামতউল্লাহ ভূঁইয়া এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সাথে যোগযোগ করে বিষয়টির দ্রুত সমাধানে ভূমিকা রাখেন। পাশাপাশি রিক্রুটিং এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে সমন্বয় করা হয়। সবশেষে জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা ও লুৎফর রহমানের উদ্যোগে সৌদি আরব থেকে লিপিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

দেশে ফিরে লিপি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা, লুৎফর রহমান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তার প্রতি। তিনি বলেন, “আমি কৃতজ্ঞ আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি চাই, বাংলাদেশ থেকে আর কোনো নারীকে সৌদির মতো দেশে পাঠানো না হয়।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, “আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি বলেই একজন মা ও বোনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। এটা অবশ্যই মানবিক দায়িত্ব ও আনন্দের বিষয়।”
সহযোগিতায় যুক্ত থাকতে পেরে লুৎফর রহমানও সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ ধরণের মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

মন্তব্য লিখুন

সাম্প্রতিক মন্তব্য

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পাদকের কলাম