আজঃ সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ -এ ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ - ১৫ রমজান ১৪৪৬
  • আজ রংপুরের আবহাওয়া

লালমনিরহাটের অদম্য মেধাবী মিথুনের ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত

Nuclear Fusion Closer to Becoming a Reality6

রহিম বাবু

রহিম বাবু , লালমনিরহাট সদর , লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

আপডেটঃ 3 সেপ্টেম্বর, 2025

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী মিথুন রায়ের ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১নং মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল গ্রামের দিনমজুর মিলন চন্দ্র ও প্রভাতি রাণী দম্পতির ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নিজের জমি না থাকায় মিলন চন্দ্র কৃষি শ্রমিকের কাজ করে পাঁচ সদস্যের সংসার চালান। অভাব-অনটনের মাঝেও সন্তানদের লেখাপড়ায় আগ্রহী তিনি। বড় ছেলে মিথুন রায় ইটাপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে জিপিএ-৪.৭২ পেয়ে এসএসসি পাশ করে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়।

অর্থকষ্টে পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে ক্লাসের ফাঁকে দোকানে কাজ ও প্রাইভেট পড়িয়ে খরচ চালায় মিথুন। চার বছরের কঠোর পরিশ্রমে ২০২৪ সালে ৩.৮৭ জিপিএ নিয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে।

এরপর প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণে ডুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং উত্তীর্ণ হয়। তবে ভর্তি ফি ও অন্যান্য খরচ মিলে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দরকার, যা তার পরিবারের নাগালের বাইরে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টাকা জমা দিতে না পারলে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

মিথুন জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করলেও এখনো কোনো সহায়তা পাননি। ফলে তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মাঝপথে থেমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইটাপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, “মিথুন আমার ছাত্র ও প্রতিবেশি। সে অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।”

মিথুনের মা প্রভাতি রাণী বলেন, “আমার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে—এই স্বপ্নে অন্যের বাড়িতে কাজ করেছি। এখন ঢাকায় ভর্তি হতে ৪০-৫০ হাজার টাকা লাগবে। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথা থেকে পাব?”

বাবা মিলন চন্দ্র বলেন, “খেয়ে না খেয়ে মিথুনের পড়ালেখা চালিয়েছি। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। কেউ সাহায্য করলে মিথুন বড় ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবে।”

মিথুন রায় বলেন, “স্কুল জীবন থেকে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন দেখেছি। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু এখন টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।”

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আসাদুল হক মন্টু বলেন, “মিথুন গরিব হলেও অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।”

মন্তব্য লিখুন

সাম্প্রতিক মন্তব্য

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পাদকের কলাম