দেবীগঞ্জে নাবালিকা প্রেম বিতর্ক, প্রেমিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা

প্রেমঘটিত ঘটনাকে ঘিরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার উপেনচৌকি ভাজনী এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া এক কিশোরীর ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও নির্যাতনের মামলা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১১ আগস্ট রাতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মসলিমা আক্তার মিষ্টি (১৩) নামের ওই স্কুলছাত্রী দেবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রায় ৬-৭ মাস ধরে তার সাথে প্রতিবেশী সোহেল রানার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এ সম্পর্ক পরিবারের অজানায় থাকেনি। বাবা-মা বিষয়টি জানার পর অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেন। এ খবর জেনে সেদিন রাতে পাত্রপক্ষ আসার আগে মিষ্টি পালিয়ে সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে ওঠে।
খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ও গণ্যমান্যরা সেখানে ভিড় জমায়। এসময় মিষ্টির দুই বড় বোন মীম আক্তার ও খাদিজা আক্তার সেখানে গিয়ে বোনকে মারধর করে। পরে মিষ্টির বাবা ইব্রাহীম আলী দেবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সোহেল রানা ও মিষ্টিকে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শরিফুলের বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে।
১২ আগস্ট সকালে পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। বিচারক মিষ্টির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। আদালতে মিষ্টি স্পষ্টভাবে স্বীকার করে বলেন, “সোহেল রানার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাবা-মা অন্যত্র বিয়ে দিতে চাইছিলেন বলেই আমি স্বেচ্ছায় সোহেলের বাড়িতে গিয়েছিলাম।”
তবে পুলিশ জানায়, মিষ্টি নাবালিকা হওয়ায় তার জবানবন্দি আইনত কার্যকর নয়। ফলে তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ, মারধর, জখম, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে—প্রেমঘটিত ঘটনায় মিষ্টিকে উদ্ধার করলেও কিভাবে নারী নির্যাতনের মামলা হলো?
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, “মেয়েটি নাবালিকা। আইন অনুযায়ী তার জবানবন্দি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই তার বাবার অভিযোগকেই মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে।”
সাম্প্রতিক মন্তব্য
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য লিখুন